সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
![](https://bangla.thereport24.com/article_images/2019/04/25/pm-5cc08ea189c4d.jpg)
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে এবং এ ধরনের জঘন্য ঘটনায় কেউ যেন সম্পৃক্ত না হন সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ শহীদুজ্জামান সরকারের তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন ১ এর উত্তর প্রদানের আগে তার প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ আহ্বান জানান। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে আমার এটাই আহ্বান থাকবে– এই ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে যেন সকলেই দূরে থাকে, এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে কেউ যেন জড়িত না হয়। সেটাই আমার কাম্য।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও আমরা দেখি বোমা হামলা এবং সন্ত্রাসী হামলা। যা আমরা কঠোর হস্তে দমন করেছি। তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে বলবো দেশবাসীকে সতর্ক থেকে কোথাও যদি এরকম অস্বাভাবিক কিছু তারা পায়, তাহলে তারা সাথে সাথে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেন জানায়।’
এর আগে শ্রীলংকায় বোমা হামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি জায়ান চৌধুরী নিহতের ঘটনা, ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকাণ্ড, বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ারম্যান সোহেল রানার মৃত্যু এবং নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলাসহ কতিপয় ঘটনার প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শ্রীলংকায় বোমা হামলায় ছোট্ট শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে জায়ানের আহত বাবার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, ‘একটা ছোট বাচ্চা মাত্র ৮ বছর বয়স, আজকে সে আমাদের মাঝে নেই। তার বাবাও মৃত্যুশয্যায়, বাবাকে এখনও জানতে দেওয়া হয়নি যে, জায়ান নেই। সে বারবার খুঁজছে। আর তার মা বা পরিবার কেমন সময় অতিবাহিত করছে তা আপনারা বুঝতেই পারছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। যারা ছোট্ট শিশু, নিষ্পাপ– তারা কেন এভাবে জীবন দেবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ঠিক এর কিছুদিন আগেই নিউজিল্যান্ডের একটি মসজিদে সরাসরি গুলি করে নারী, পুরুষ শিশুসহ অনেকগুলো মানুষকে হত্যা করা হলো। নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেট টিম সেখানে ছিল, খুব অল্পের জন্য তাঁরা বেঁচে গিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ কখনও মানুষের কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সোনাগাজিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা নুসরাত জাহান রাফির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘নুসরাতের সাথী যারা তার গায়ে কেরসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারলো। যে একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। এই ধরনের ঘটনাগুলো সমগ্র মানবজাতির জন্যই অকল্যাণকর। আমরা চাই না এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর কোথাও আর ঘটুক।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদী তাদের কোনো ধর্ম নাই, দেশ কাল পাত্র নাই, জঙ্গি জঙ্গিই, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই।’
ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং কখনো জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না– একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরা আমাদের পবিত্র ধর্মটাকেই সমগ্র মানবজাতির কাছে হেয় প্রতিপন্ন করে দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, কেবল ইসলাম নয়, ‘সকল ধর্মেই শান্তির বাণী প্রচার করা হয়েছে। কিছু লোক ধর্মীয় উন্মাদনায় মানুষের প্রতি যে আঘাত আনে, জীবন কেড়ে নেয়, এটা মানব জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর।’
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ২৪,২০১৯)