ভয়াবহ রূপ নিতে পারে ফণি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণি ভারতের অন্ধ্র উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে শক্তি সঞ্চয় করছে। ভয়ঙ্কর এ ঘূর্ণিঝড় শেষ পর্যন্ত কোন দিক দিয়ে উপকূলে আঘাত হানবে, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা নিশ্চিত হতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।
ফণির মতিগতি বুঝতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, ভারতের উপকূলমুখী ফণি গতিপথ পাল্টে বাংলাদেশের দিকেও অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী দু'দিনে ফণি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। পরে গতিপথ উত্তর-পূর্বদিকে পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ২ থেকে ৩ মে ভারতের মেঘালয় অববাহিকায় এবং ৬ থেকে ৭ মে ভারতের মেঘালয়সহ বাংলাদেশের মেঘনা অববাহিকা, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দুপুরের আগে ফণি পেতে পারে হারিকেনের তীব্রতা। তখন একে বলা হবে 'ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম' বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়, তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫৫ কিলোমিটার।
ফণির মতিগতি বিশ্নেষণ করে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার যে সম্ভাব্য গতিপথ বের করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত এ ঝড় অন্ধ্র উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়ে পরে উত্তর দিকে বাঁক নেবে। উত্তাপ আর জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে এরপর এগোতে শুরু করবে উত্তর-পূর্বদিকে। আগামী ৩ মে থেকে কমে আসতে পারে এ ফণির শক্তি।
ফণির কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আশরাফুল আলম সমকালকে বলেন, ফণি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফণির প্রভাবে রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ২৮,২০১৯)