শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ‘গণঅনশনে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতীকী গণঅনশন করছেন শেয়ারবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে ১২ দফা দাবি নিয়ে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ‘পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’র ব্যানারে এই প্রতীকী গণঅনশন শুরু হয়।
প্রতীকী গণঅনশনের বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। দরপতনের প্রতিবাদে আমরা নিয়মিত মানববন্ধন করছি। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই এখন প্রতীকী গণঅশন করছি। আমাদের দাবি মানা না হলে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
বিনিয়োগকারীদের দাবির মধ্যে মধ্যে রয়েছে-
১. সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে;
২. যে সমস্ত কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে এবং করবে-ওই সমস্ত কোম্পানিকে বাধ্যতামূলকভাবে ন্যূনতম ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। জেড গ্রুপের এবং ওটিসি (ওভার দ্য কাউন্টার) মার্কেট বলতে কোনো মার্কেট থাকতে পারবে না;
৩. দুর্বল কোম্পানির আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে;
৪. খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে;
৫. ২সিসি আইনের বাস্তবায়ন করতে যে সকল কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ব্যক্তিগত ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই সেসব উদ্যোক্তা পরিচালকদের ও কোম্পানিগুলোকে বিচারের আওতায় আনতে হবে;
৬. পুঁজিবাজারে অর্থের জোগান বৃদ্ধির জন্য সহজ শর্তে ৩ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে, যা আইসিবি, বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে ৫ শতাংশ হারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লোন হিসেবে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে;
৭. পুঁজিবাজারের প্রাণ মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে পুঁজিবাজারে সক্রিয় হতে বাধ্য করা এবং প্রত্যেক ফান্ডের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে কমপক্ষে ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে এবং মেয়াদ না বাড়িয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে উন্মুক্ত ফান্ডে রূপান্তর করতে হবে;
৮. পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে;
৯. ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট-২০১৫ বাস্তবায়ন ও বাইব্যাক আইন চালু করতে হবে;
১০. আইপিওর শেয়ারে সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৮০ শতাংশ কোটা দিতে হবে;
১১. ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মার্জিন লোনের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করতে হবে এবং
১২. ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিপরীতে বাংলাদেশ স্টক এক্সচেঞ্জ নামে বিকল্প স্টক এক্সচেঞ্জ করতে হবে। এর ফলে কারসাজি বন্ধ করা যাবে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)