‘জঙ্গি আস্তানা’য় কমপক্ষে দুজন নিহত: বেনজীর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জঙ্গি আস্তানায় কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছে। তিনটি পা দেখা গেছে। এখনও আস্তানা আগুনে জ্বলছে।
আস্তানা পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কেউ জঙ্গিবাদে জড়ালে ছাড় দেয়া হবে না।
এর আগে র্যাবের এডিজি (অপারেশন) কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘বিস্ফোরণে জঙ্গিদের ছিন্ন-ভিন্ন দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সুইপিংকালে তা দেখতে পেয়েছে। কমপক্ষে একজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।’
তিনি বলেন, ভেতরে অবিস্ফোরিত বোমা ও আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) দেখা গেছে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। বিস্ফোরণে টিনশেড ভবনের টিনের চাল ও বেড়া উড়ে গেছে। টিনশেড ভবনটির পেছনে খাল। খালপাড়ে ঝোপজঙ্গল। সেখানেও উড়ে যাওয়া টিনের টুকরো, শরীরের অঙ্গ দেখা গেছে।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি এখন ঢাকার বাইরে। তিনি জানিয়েছেন, দেড়মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেয় দুইজন ভ্যান চালক। এ মাসে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল। তারা ভ্যান চালানোর আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে যান র্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। র্যাব সদস্যরা এ সময় আস্তানা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন। র্যাবের স্পেশাল ফোর্স ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।
মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, আরও দুই-তিন ঘণ্টা পর বিস্তারিত বলা যাবে।
আস্তানাটির তথ্য জানতে ব্যবহার করা হয় ড্রোন। ড্রোন দিয়ে জঙ্গি আস্তানার ভেতরের ও বাইরের অবস্থা জানার চেষ্টা করে র্যাব ইন্টেলিজেন্স শাখা। আনা হয়ে অত্যাধুনিক মেশিন, যা দিয়ে দূর থেকে আস্তানার ভেতরের শব্দ ও কথাবার্তা শোনা যায়।
এর আগে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোহাম্মদপুর বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ে অভিযান শুরু করে র্যাব। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়েই বিস্ফোরণ ঘটে আস্তানায়। এরপর ভোর ৫টার দিকে বড় বিস্ফোরণ ঘটে।
বাড়িটি ঘেরাও করার পরই কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। তারা হলেন- কেয়ারটেকার সোহাগ, সোহাগের বউ মৌসুমী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইউসুফ।
র্যাব-২ এর এসপি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, টিনশেড বাড়িটির কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ওই টিনশেড ভবনে কারা কারা থাকেন। কীভাবে ভাড়া দিয়েছেন। সোহাগ ওই এলাকায় ডিশের ব্যবসা করেন।
তিনি বলেন, টিনশেড বাড়িটির পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটি সম্প্রসারণ করে মাদরাসা করার কথাও চলছিল। মসজিদের ইমাম ইউসুফকেও তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই টিনশেড বাড়ির বাসিন্দা জোনায়েদ বলেন, ওই টিনশেড বাড়িতে চারটি রুম। তিনি এক রুমে থাকেন। পেশায় রড-সিমেন্টের মিস্ত্রি, বাড়ি-ঘরের কাজ করেন।
তিনি বলেন, দুজন যুবক এক দেড় মাস হলো ভাড়ায় উঠেছেন। আজ ভোরে বিস্ফোরণের আগে আমাদের বের করে আনে র্যাব। ভোর ৫টায় যে বিস্ফোরণটি হয় তা ছিল খুব বড়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)