দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল ও জামিন চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিল আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)।

হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আজকের (কজলিস্টের) কার্যতালিকায় ৪ নম্বরে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী এ কে এম এহসানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছর সাজা হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন এবং জামিনেরও আর্জি করা হয়েছে। মঙ্গলবার আপিল ও জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর নিম্ন আদালতের সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আবেদনটিতে মূল আপিলসহ সাতশরও বেশি পৃষ্ঠার নথিপত্র রয়েছে বলে তিনি জানান।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর তিন আসামিকেও একই দণ্ডাদেশ দেন আদালত।

এই মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন। বাকি দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত ওই তিনজনকেও অভিন্ন সাজা দিয়েছেন।

এছাড়া মামলার পলাতক আসামি হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি আদালতে উপস্থিত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে যে ৪২ কাঠা জমির ক্রয় নিয়ে মামলার সূচনা, সেই জমিটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।

জমির মালিককে দেয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির টাকা অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছিলেন আদালত। পরে গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এ মামলায় সাজা বৃদ্ধি করে ১০ বছর করেন। এর আগে বিচারিক আদালতে এই মামলার রায় ঘোষণার পরেই ২০১৮ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাস থেকে পুরাতন কারাগারে রয়েছেন খারেদা জিয়া।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ৩০, ২০১৯)