৮ বছরে পুঁজিবাজারে যতো সংস্কার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের পর ব্যাপক সংস্কার হয়েছে পুঁজিবাজারে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে এ সংস্কার করা হয়।
নানা সংস্কারের মধ্যেই ৮ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন খায়রুল হোসেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনের অনুযায়ী একবার পুর্ননিয়োগের পরও জনস্বার্থে তার মেয়াদ ২ বছর বাড়ানো হয়েছে। তার এই নেতৃত্বগুণের জন্যই বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে এম খায়রুল হোসেনকে চায় সরকার।
২০১১ সালের ১৫ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের কারণ অনুসন্ধানে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির বিএসইসিকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শের আলোকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
প্রথম মেয়াদে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পান খায়রুল হোসেন। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পুর্ননিয়োগ পান তিনি। তবে এক্ষেত্রে তিনি ৪ বছরের জন্য পুর্ননিয়োগ পান। পরবর্তীতে জনস্বার্থে গত বছরের ২৪ এপ্রিল তার মেয়াদ আরো ২ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন গত ৮ বছরে ৭০টিরও বেশি সংস্কার করেছেন।
এই কমিশনের কাজের সফলতায় বিএসইসি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসে (আইওএসসিও) বিএসইসি ‘এ’ ক্যাটাগরি অর্জন করেছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতও খায়রুলের নেতৃত্বর প্রশংসা করেছেন। বিএসইসির দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, শেয়ারবাজার ধসের পরে বিএসইসি পুর্নগঠন করা হয়। যে কমিশনের কয়েক বছর কেটেছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে।
বিজ্ঞাপন
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর গত ৮ বছরে নানা সংস্কার হয়েছে। এরপর শেয়ারবাজারে কোনো অবনতি হয়নি। অনেক ইতিবাচক সংস্কারের ফলেই আইওএসসিওতে বিএসইসির ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত হয়েছে।
এটি একটি স্বীকৃতি ও প্রশংসনীয়। তাই কাজ ভালো হওয়ার কারণেই এটি হয়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন বলেন, আমরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
‘‘কারণ আমাদের প্রধান দায়িত্ব তাদের বিনিয়োগকে সুরক্ষা দেওয়া। এজন্য আমারা পুঁজিবাজারে ৭০টি সংস্কার কাজ করা হয়েছে। এর ফলে শেয়ারবাজারের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। এবং শেয়ারবাজারে নতুন করে মহাধসের সৃষ্টির সুযোগ নেই।’’
তবে কিছু বিষয়ে সমালোচনায়র মুখে পড়তে হয়েছে খায়রুল হোসেনকে। বিশেষ করে দুই একটি দুর্বল আইপিও নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়েন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা ডিসক্লোজার বেসিস আইপিও দিয়ে থাকে। ইস্যু ম্যানেজার যেসব কাগজপত্র জমা দেয়, তা যাছাই-বাছাই করেই আইপিও দিতে হয়। সত্যতা যাছাইয়ে কোম্পানি পরিদর্শনের সুযোগ কমিশনের নেই। এক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারদের বেশি সচেতন হওয়ার কথা বলেন তিনি।
খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের অনেক অর্জন হয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পরিচালক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ২০১০ পরবর্তী বিনিয়োগকারীদের হতাশা দূর করতে সক্ষম হয়েছে তার নেতৃত্বে গঠিত কমিশন।
গত ৮ বছরে বাংলাদেশে পৃথিবীর সবচেয়ে কম সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নানা সংস্কার করেছেন বর্তমান বিএসইসি চেয়ারম্যান। যার কোনটিই শেয়ারবাজারের জন্য নেতিবাচক না।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ০১,২০১৯)