ফেনীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের জিডি
ফেনী প্রতিনিধি : মিথ্যাচার করে জিডি করায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় জিডি করেছেন সময় টিভি’র ফেনী ব্যুরো অফিসের রিপোর্টার আতিয়ার সজল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী মডেল থানায় জিডিটি (নং-৬৮) করা হয়। এসময় ফেনী প্রেসক্লাব কর্মকর্তারাসহ ফেনীর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আতিয়ার সজল তার জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘‘গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পর তৎকালীন সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাটিকে গণমাধ্যমসহ সকলের কাছে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া ছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় ৮ এপ্রিল অনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে তিনিসহ একাধিক গণমাধ্যম কর্মী তার বক্তব্যের জন্য সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে যান।
এসময় জানান, তার নিকট ২৭ এপ্রিল তারই রেকর্ডকৃত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির দুইটি জবানবন্দির ভিডিও ফাইল রয়েছে। সেটা দেখলেই বুঝা যাবে নুসরাতের মনে আগে থেকেই আত্মহত্যা করার প্রবণতা তৈরী হয়েছিল। সজল ভিডিও ফাইল দুটি তার কাছে সম্প্রচারের জন্য চাইলে তিনি স্বেচ্ছায় অতি উৎসাহী হয়ে নিজেই সজলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে স্থানান্তর করেন। এসময় তিনি উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও ভিডিও ফাইল দুটি দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।’’
নুসরাতকে হত্যার ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ছাড়াও মাদ্রাসা পরিচালানা কমিটির সাবেক সভাপতি ও ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি কে এম এনামুল করিম,তৎকালীন সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন, সোনাগাজী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবাল ও মো. ইউসুফের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে শাস্তির সুপারিশ করেছে।
গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা পিবিআইয়ে হস্তান্তরের পর এখন পর্যন্ত মামলার এজহারভুক্ত আট আসামিসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ০২,২০১৯)