লন্ডভন্ড পুরী-ভুবনেশ্বর : মৃত ৩
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সময়মতো আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা। আর সেই অনুযায়ী আগাম প্রস্তুতি। কিন্তু তাতেও প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা থেকে রেহাই পেল না ভারতের পুরী, ভুবনেশ্বর-সহ ওড়িশার উপকূল বরাবরের গ্রাম শহর। লন্ডভন্ড বললেও সেই ধ্বংসলীলার প্রকৃত ছবিটা তুলে ধরা কঠিন। গাছপালা উপড়ে, ভেঙে, বাড়িঘর তছনছ করে উদ্দাম গতিতে ছুটে চলেছে ফণী।
আনন্দ বাজারের খবরে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বহু জায়গায় রেললাইন উপড়ে গিয়েছে। রাস্তার উপর ভেঙে পড়েছে টাওয়ার, বিদ্যুতের খুঁটি। পুরী, ভুবনেশ্বরের প্রবীণদের অনেকেই বলছেন, প্রকৃতির এমন ভয়াল-ভয়ানক রূপ আগে কখনও দেখেননি তাঁরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মূলত শহরাঞ্চলের ছবিটাই উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। কারণ ওড়িশার বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চল এখনও বিচ্ছিন্ন। সেই অঞ্চলের চিত্র যে আরও ভয়াবহ হবে, সেটা আন্দাজ করে এখনই আঁতকে উঠছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তাঁদের অনেকেই বলছেন, কংক্রিটে মোড়া শহরের এই ছবি থেকেই বোঝা যাচ্ছে কার্যত গ্রামের পর গ্রাম মাটিতে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা। তবে আপাতত আশার কথা একটাই, 'এক্সট্রিমলি সিভিয়ার' থেকে 'ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম'-এ পরিণত হয়েছে ফণী। আর এ রাজ্যে ঢোকার আগে শক্তিক্ষয় হয়ে সেই ঝড়ই হয়ে যাবে 'সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম'।
মৃত ৩
ফণীর দাপটে তিনটি পৃথক ঘটনায় মৃত্যু হল এক মহিলা-সহ ৩ জনের। পুরী জেলার সাক্ষীগোপাল এলাকায় মাথায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরের। নয়াগড় জেলায় একটি কংক্রিটের অংশ উড়ে এসে এক মহিলার গায়ে পড়ে। তাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রাপাড়া জেলার দেবেন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের একটি সাইক্লোন শেল্টারে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ মারা যান।
আছড়ে পড়ল ফণী
পূর্বাভাস ছিল আজ শুক্রবার দুপুরে ওড়িশার উপকূলে পুরী এবং চাঁদবালিতে আছড়ে পড়বে ফণী। কিন্তু গতি বেড়ে যাওয়ায় তার আগে সকাল দশটা নাগাদই ওড়িশার উপকূলে শুরু হয়ে যায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া এবং তুমুল বৃষ্টি। আর দুপুর ১২টার মধ্যেই উপকূল ভাগে পুরোপুরি পৌঁছে যায় ফণী। অর্থাৎ উপকূলে পৌঁছে যায় ‘আই অফ দ্য স্টর্ম’ বা ঝড়ের কেন্দ্রবিন্দু। তার পর থেকেই প্রবল গতিতে এগচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে।
লন্ডভন্ড পুরী-ভুবনেশ্বর
ফণীর প্রথম শিকার পুরী এবং সংলগ্ন এলাকাগুলি। আগে থেকেই পুরীর সমস্ত হোটেল, লজ খালি করে দেওয়া হয়েছিল। কার্যত জনমানবশূন্য ছিল সৈকতশহর। কিন্তু রক্ষা পায়নি স্থায়ী কাঠামো, বাড়িঘর, গাছপালা। ফুঁসছে সমুদ্র। বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। বাঁধ উপচে ইতিমধ্যেই শহরে জল ঢুকছে। নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন। তাণ্ডব চলছে ভুবনেশ্বর, কটক, ভদ্রক, চাঁদিপুর, বালেশ্বরের মতো এলাকায়। আপাতত ঝড় থামার অপেক্ষায় প্রশাসন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হবে উদ্ধারকাজ। অতিভারী বৃষ্টিপাত চলছে পুরী, খুরদা, ভুবনেশ্বর এবং জগদীশপুরে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ০৩,২০১৯)