খুলনা উপকূলে বৃষ্টি-ঝড়ো হাওয়া, আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
ছবি: মাওলা বক্স,কয়রা
খুলনা ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনা উপকূলে হালকা বৃষ্টি ঝড়ছে। সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। শুক্রবার দুপুরের পর আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করায় উপকূলীয় এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে শুরু করেছেন। নদ-নদীগুললোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩/৪ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন বিকেলে দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
কয়রা উপজেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. জাফর রানা জানান, বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে মানুষ। উপজেলার আবহাওয়া এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। তারপরও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে ১২৬ সদস্যের ৭টি টিম মাঠে নেমে পড়েছে। মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে আকাশে কালো মেঘ দেখে কয়রা উপজেলার লোকজন নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩, ৪, ৫ ও ৬নং কয়রা সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে এবং উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের লোকজন নিজেদের জান মাল রক্ষার্থে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়রায় মানুষের মধ্যে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ অমাবস্যার সময় নদীতে দেড় থেকে দুই ফুট পানি বেড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, আইলার প্রাক্কালে যেমন তীব্র গরম অনুভব হয়েছিল, তেমনি মনে হচ্ছে। আর অমাবশ্যার সময় হওয়ায় তারা বাঁধ ভাঙন ও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে জেলার ৩২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে বের হতে অপারগতা প্রকাশ করলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়রা উপজেলায় ১ হাজার ৯৫ জন ও দাকোপ উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবকপ্রস্তুত রয়েছেন।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং ৯টি উপজেলায় ৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৪টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ০৩,২০১৯)