দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলছেন, তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের জিহাদি বধূ শামীমা বেগম যদি বাংলাদেশে গিয়ে হাজির হয়, তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড হবে।

লন্ডনে বিবিসি বাংলার মিজানুর রহমান খানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. মোমেন বলেন, সন্ত্রাসের প্রশ্নে বাংলাদেশ 'জিরো টলারেন্স' বা একেবারেই বরদাশত না করার অবস্থান নিয়েছে।
"এ ধরনের অপরাধীর শাস্তি মৃত্যু," বলেন তিনি।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম মাত্র ১৫ বছর বয়সে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি কুর্দি মিলিশিয়াদের হাতে ধরা পড়ার পর তিনি এখন সেখানে একটি বন্দী শিবিরে আটক রয়েছেন।

ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করেছে। কিন্তু কাউকে রাষ্ট্রবিহীন করা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ- সে সময় এই বিতর্ক উঠলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল শামীমা বেগম তার বাব-মার সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে পারেন।
কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, শামীমা বেগমকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

"শামীমা বেগমকে আমরা চিনি না। শামীমা বেগমের জন্ম ব্রিটেন। ব্রিটেনে বড় হয়েছে, শিক্ষা দীক্ষা ব্রিটেন। সে কোনোদিন বাংলাদেশে যায়নি। কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বও চায়নি... তার বাব-মাও ব্রিটিশ নাগরিক।"

মন্ত্রী বলেন, শামীমা বেগমের দায়িত্ব ব্রিটিশ সরকারের এবং তাকে নিয়ে তারা কী করবে সেটা তাদেরই দায়িত্ব। "আমাদের এর সাথে জড়ানো খুবই দু:খজনক।"

এরপরও যদি শামীমা বেগম বাংলাদেশে গিয়ে হাজির হয়, তাহলে সরকার কী করবে? - বিবিসির এই প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, "আইন অনুযায়ী শাস্তি দেব, জেলে নিয়ে যাবো, সর্বোচ্চ শাস্তি হবে তার।"
কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত তো আদালতের? এই প্রশ্নে মি মোমেন বলেন, "বাংলাদেশের আইনেই মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। আপনারাই (ব্রিটেন) বলছেন সে সন্ত্রাসী। এ ধরনের সন্ত্রাসীদের কি এদেশে আদালতে নেওয়া হয়? আমেরিকাতে তো তাদের সোজা গুয়ানতানামো বে বন্দী শিবিরে নেওয়া হয়।"

"আর প্রথম কথা তাকে (শামীমাকে) বাংলাদেশে ঢুকতেই দেওয়া হবে না।"
মি. মোমেন বলেন, "আপনারা এই প্রশ্ন তোলেন না কেন যে এই তরুণ তরুণীদের কারা ইরাক, সিরিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে? যাওয়ার সময় আটকায় না কেন? কারা তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে, টাকা-পয়সা দিচ্ছে? ট্রেনিং দিচ্ছে? প্ররোচনা দিচ্ছে?"

বাংলাদেশ থেকেও তো অনেকে সিরিয়ায় গেছে - এই প্রশ্ন তুললে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে নয় অন্য দেশে বড় হওয়া বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত অনেক ছেলে-মেয়ে গেছে।

(দ্য রিপোর্ট/টিআইএম/০৩ মে,২০১৯)