বাংলাদেশের শিক্ষাকার্যক্রম : প্রসঙ্গ ইংরেজী মাধ্যম
ডক্টর মো. মাহমুদুল হাছান
(পূর্ব প্রকাশের পর) বর্তমানে এডেক্সেল কোয়ালিফিকেশনে ৫ টি স্তর বিন্যাস রয়েছে, যথাঃ GCE (IGCSE), AS and A Level, BTEC Nationals, BTEC Higher Nationals, BTEC Tech Awards এবং Explorer Courses. এছাড়াও Edexcel এর ২৯ কোয়ালিফিকেসন সার্ভিস রয়েছে। বাংলাদেশে GCSE ও AS & A Level এর প্রচলন রয়েছে। সম্প্রতি প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক এর অন্য আরেকটি স্তর সংযোজিত হয়েছে আর তা হলো iPLSC এবং এটি ঐচ্ছিক; আবশ্যিক নয়। ছাত্র-ছাত্রিরা ইচ্ছা করলে এটি বর্জন করতে পারে আবার গ্রহনও করতে পারে। প্রায় ৪৭ টি বিষয়ে এডেক্সেল কারিকুলামে পড়ানো হয়ে থাকে। একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে কমপক্ষে ৫ টি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হয়, যদিও তা আবশ্যিক নয়।
সাধারণত ৩ টি বিষয়কে বিভিন্ন স্কুল আবশ্যিক (compulsory) হিসাবে পড়িয়ে থাকে, যেমন ইংলিশ, ম্যাথ ও সাইন্স এবং অন্য যে কোন বিষয় শিক্ষার্থী পছন্দ করে নিতে পারে। সাধারণত GCSE পাসের পর কেউ চাকরি করতে চাইলে চাকরি দাতা বা সংস্থা 5A to C গ্রেড প্রত্যাশা করে থাকে। IGCSE পাসের পর শিক্ষার্থীরা (A Level) কারিকুলামে ভর্তি হলে তাকে ( AS ও A Level) দুটি ক্যাটাগরিতে পড়তে হয়। AS Levelএ ১ বৎসরসহ A Level-এ মোট দুই বছরের জন্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে এ ধারার শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। এডেক্সেল কারিকুলামে IGCSE ও IAL এর পূর্বে আরো দুটি ধাপে শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়, একটি iPrimary ও অন্যটি iLower Secondary । উভয় স্তরই ৪ থেকে ১৪ বৎসরের ছেলে মেয়েদের জন্য পাঠ্যক্রম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কোয়ালিফিকেশন এক্সাম বা যোগ্যতা পরীক্ষায় মাত্র তিনটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় তবে এটি কোন নিয়োগ পরীক্ষা বা O Level সম্পন্ন করতে কোন আবশ্যকীয়তার সমস্যায় পড়তে হয় না এবং কখনও জিজ্ঞাস্যও হবে না। এটি শিক্ষার্থীর একটি যোগ্যতার মূল্যায়ন GCSE এর প্রস্তুতিমাত্র।
সর্বোপরি Pearson Edexcel তার সকলকোয়ালিফিকেশন Service কে iProgress Family তে সন্নিবেশিত করেছে যার মধ্যে iPrimary, iLower Secondery, IGCSE, GCSE, IAL ও A Level সামগ্রিক অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং পিয়ারসন এডেক্সেল সারা বিশ্ব ব্যাপী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ, সহযোগিতাপূর্ন ও যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান করে সে অনুযায়ী মূল্যায়ন করে থাকে।
পিয়ারসন এডেক্সেল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে নানাবিধ কারণে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। এর প্রধান কারণগুলি নিম্নরূপ:
১। এটি যুক্তরাজ্যের মুক্ত গবেষণায় আন্তর্জাতিক ভাবে এওয়ার্ডিং অর্গানাইজেশন বা পুরষ্কার প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে স্বীকৃত ও সর্বসাধারন কর্তৃক মূল্যায়িত।
২। এটি ইউ কে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এওয়ার্ডিং অর্গানাইজেশন, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রক্ষায় শক্তিশালী।
৩। এটির ফ্রি অনলাইনে প্রবেশাধিকার রয়েছে, যা শিক্ষার্থী ও নিবন্ধিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহজে কার্যোদ্ধার করা সম্ভব হয়।
৪। বিশ্বমানের নিয়ম-নীতিতে সহনীয় ধারায় শিক্ষার্থী মূল্যায়নে IGCSE তে ৯-১ এর গুরুত্বপূর্ণ গ্রেডিং পদ্ধতি বহুল প্রসিদ্ধ ও প্রশংসিত।
৫। এ শিক্ষা কার্যক্রমে সর্বাধিক বিষয় বাছাই করার সুযোগ রয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধা মত সাবজেক্ট বেছে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। এই সুবিধা IGCSE ও IAL উভয়স্তরে প্রযোজ্য।
৬। অধিক ও যুগোপযোগী যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনে এ শিক্ষা কার্যক্রম বেশ সহযোগী।
৭। বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশ সমূহে উচ্চতর শিক্ষা ও ভাল চাকরি ব্যবস্থায় এ শিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
৮। পিয়ারসন এডেক্সেল শিক্ষা কার্যক্রমে পেশাগত উন্নয়ন ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে যা শিক্ষক শিক্ষিকাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে এবং ছাত্র ছাত্রীদের শিখনফলেও বেশ কার্যকরী ।
৯। আলোচ্য শিক্ষা কার্যক্রমে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একই কারিকুলামে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
১০। এক কথায়, পিয়ারসন এডেক্সেল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অতি জনপ্রিয় ও বিশেষভাবে স্বীকৃত।
পক্ষান্তরে, আমাদের দেশের ইংরেজি মাধ্যম আন্তর্জাতিক কারিকুলামে ক্যামব্রিজ (Cambridge) শিক্ষা কার্যক্রম বেশ আলোচিত বিষয়। এডেক্সেলের মত অনেক ছাত্র ছাত্রী এ কারিকুলামে পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং যোগ্যতা অর্জন করে। এটিও একটি যোগ্যতা পরীক্ষায় বোর্ড এবং আন্তর্জাতিক ভাবে বিশ্বের প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ও নিয়োগকর্তা কর্তৃক স্বীকৃত একটি অলাভজনক পরীক্ষা বোর্ড।
ক্যামব্রিজ শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষা কর্মসূচি ও যোগ্যতা নির্ণয় পদ্ধতিসমূহ আন্তর্জাতিক মানের, যা বিষয় ভিত্তিক অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা সাজানো, একাডেমিশিয়ান কর্তৃক প্রণীত ও সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষিত। ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (CIE) যা বর্তমানে CAIE তথা “ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন” হিসেবে পরিচিত । ২০১৭ সালে CIE নতুন CAIE তে নামকরন করা হয়। এ শিক্ষা কার্যক্রমে ৫ থেকে ১৯ বছরের ছেলে মেয়েদের জন্য ৮ টি স্তরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে যা Cambridge Pathway এর অধীনে বাস্তবায়িত হয়। স্তর চারটি হল-
১। ক্যামব্রিজ প্রাইমারি, যা ৫ থেকে ১১ বৎসর ছেলে মেয়েদের জন্য সাজানো হয়েছে। এ শিক্ষা কার্যক্রমে ইংরেজি, অংক, বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়গুলো নির্ধারিত থাকে।
২। ক্যামব্রিজ লোয়ার সেকেন্ডারি, যা ১১ থেকে ১৪ বৎসরের ছেলে মেয়েদের জন্য সাজানো। এ স্তরেও প্রথম স্তরের ৪ বিষয় নির্ধারিত।
৩। ক্যামব্রিজ আপার সেকেন্ডারি, যার শিক্ষাক্রম ১৪ থেকে ১৬ বৎসর বয়সের ছেলে মেয়েদের জন্য সাজানো । এ স্তরে রয়েছে ক্যামব্রিজ আই জি সি এস ই যেখানে ৭০ টিরও বেশি বিষয় থেকে পছন্দনীয় বিষয় সমূহ নির্বাচন করা যায়। এবং আরো রয়েছে ক্যামব্রিজ ও লেভেল (O Level) যেখানে ৪০ টিরও বেশি বিষয় থেকে যে কোন বিষয় পছন্দ করে পড়াশুনা করা যায়।
৪। সর্বশেষ স্তর হলো ক্যামব্রিজ এডভান্সড, যা ১৬ থেকে ১৯ বৎসর বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। এ শিক্ষাক্রম সাজানো হয়েছে ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এ এস (AS) এবং এ লেভেল (A Level) এর জন্যযেখানে ৫৫ টিরও বেশি বিষয় থেকে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের পছন্দ মত বিষয় নির্বাচন করতে পারে। এ ছাড়াও এ স্তরে রয়েছে ক্যামব্রিজ প্রি-ইউনিভারসিটি যা ২০ এর অধিক বিষয় থেকে পছন্দেরটি নির্বাচন করে যোগ্যতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
CAIE বা ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন এর শিক্ষা কার্যক্রমের মৌলিক ধারায় ৫ টি উপাদান নিয়ে কর্ম সম্পাদিত হয়ে থাকে। উপাদান সমুহ হলোঃ
১.ইন্টারন্যাশনাল কারিকুলাম বা আন্তর্জাতিক শিক্ষা কার্যক্রম
২.টিচিং ও লার্নিং বা শিক্ষণ ও শিখন
৩.এসেসমেন্ট বা মূল্যায়ন
৪.ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
৫.গ্লোবাল কমিউনিটি বা বৈশ্বিক সম্প্রদায়।
১৬০ টি দেশের ৯ টি আঞ্চলিক দপ্তর থেকে নিয়ন্ত্রিত ১০ হাজারেরও বেশী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকে এই CAIE এর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। আঞ্চলিক দপ্তরগুলো হলো, নর্থ আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, ইউ কে, ইউরোপ, সাহারা আফ্রিকা, মিডল ইস্ট, নর্থ আফ্রিকা, সাউথ এশিয়া ও সাউথইস্ট এশিয়া প্যাসিফিক।
CAIE কার্যক্রমের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বে অনেক বেশী, কারণ-
১। এ শিক্ষা কার্যক্রম ছাত্র ছাত্রীদেরকে জীবনমুখী শিক্ষা প্রদানে সক্ষম।
২। এটি ছাত্র ছাত্রীদের দীর্ঘমেয়াদি টেকসই শিক্ষা গ্রহনে কৌতূহল বৃদ্ধি করে।
৩। এ শিক্ষা কার্যক্রমে যে কোন স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের চাহিদা মোতাবেক শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারে।
৪। ছাত্র ছাত্রীদের নতুন থেকে নতুনতর সক্ষমতা যোগ্যতা অর্জনে সহযোগিতা করে।
৫। ও লেভেল এবং এ লেভেল অর্জনের পর ছাত্র ছাত্রীদের উচ্চতর শিক্ষা গ্রহনের আধুনিক দ্বার উন্মুক্ত করতে দিক নির্দেশনা প্রদান করে।
৬। ক্যারিয়ার গঠনে ও পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৭। ক্যামব্রিজ কারিকুলাম তুলনামুলকভাবে সহজলভ্য, শিথিল, মানানসই ও যুগোপযোগী।
৮। এ কারিকুলাম থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ভাবে বেশী মুল্যায়িত ও স্বীকৃত হয়ে থাকে।
৯। এ কারিকুলামের সাথে স্থানীয় ও জাতীয় কারিকুলামের মাঝে সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।
১০। ক্যামব্রিজ কারিকুলাম থেকে পাশকৃত শিক্ষার্থীরা উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণকালে একই শিক্ষা কার্যক্রম অনুসরণ করতে পারে।
১১। ক্যামব্রিজ কারিকুলাম শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞানশক্তি, আনুধাবনশক্তি ও উচ্চমানের চিন্তাশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১২। বিষয়ভিত্তিক অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রি ভাবে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান চর্চা করতে পারে।
১৩। এ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা অসংখ্য বিষয়ের মধ্য থেকে পছন্দনীয় বিষয় নির্বাচন করে শিক্ষাধারা অব্যাহত রাখতে পারে।
মোদ্দাকথা, ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন বা CAIE কারিকুলাম বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও অসংখ্য দেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্বীকৃত ও মূল্যায়িত ।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যায় CAIE প্রায় ১৫০ বছরাধিক সময়কাল পূর্বে প্রতিষ্ঠিত। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম “লোকাল এক্সামিনেশন সিন্ডিকেট’ গঠন করে যা পরবর্তীতে ’ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। ১৮৫৮ সালে সর্বপ্রথম মাত্র ৩৭০ পরীক্ষার্থী নিয়ে ইংল্যান্ডের ৮ টি শহরে এ প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম শুরু করে, বর্তমানে যা প্রায় আট মিলিয়নে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং দেশ সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ১৬০ টিতে। ১৮৬৪ সালে এ সিন্ডিকেট মূলত তার কার্যক্রম শুরু করে এবং তা দ্রুত উন্নতি সাধন করে। ১৯৯৮ সালে এটি ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন বা সি আই ই (CIE) এর নামে এর মৌলিক প্রশ্ন কাঠামো ও শিক্ষার্থীদের বয়স সীমা নির্ধারণ করে ৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে ৪ টি স্তরে পরীক্ষা সম্পন্নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এটি আবারো নামকরন করা হয় ‘ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন’ বা সি এ আই ই (CAIE) এবং এ নামেই এটি এখন পরিচিত ও পরিচালিত।
CIAE ও EDEXCEL এর মধ্যে পার্থক্যঃ
প্রকৃত পক্ষে CIAE ও EDEXCEL এর মধ্যে বড় ধরনের কোন পার্থক্য নেই, কারন উভয়টি একটি Global Examination Board হিসেবে কাজ করে এবং ইংল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। তদুপরি, এ দুটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে কারিকুলামকেন্দ্রিক কিছু পার্থক্য রয়েছে যা নিম্নেবর্ণিত হলো :
১। CAIE কারিকুলাম বহুকাল পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এবং অধিক রাষ্ট্রে তা পরিচালিত। পক্ষান্তরে EDEXCEL এর প্রতিষ্ঠা কয়েক বছর আগে এবং তা অনেক দেশেই পরিচিত।
২। CAIE শুধুমাত্র একাডেমিক কোয়ালিফিকেসন ও পরীক্ষা সম্পাদন করে থাকে, কিন্তু EDEXCEL একাডেমিক ও ভোকেশনাল কোয়ালিফিকেসন এবং টেস্টিং এর মাধ্যমে তা স্কুল কলেজ ও উচ্চতর শিক্ষাস্তরে পড়ালেখার সুযোগ করে দেয়।
৩।CAIE কারিকুলাম অনেক পুরাতন হলেও এর Exam System গতানুগতিক ও একই ধারায় সন্নিবেশিত । পক্ষান্তরে EDEXCEL নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর পরীক্ষা গ্রহন পদ্ধতি বেশ আধুনিক ও দ্রুত সমাধানযোগ্য।
৪। CAIE এর প্রশ্নপ্রণালী ও প্রশ্ন কাঠামো EDEXCEL থেকে তুলনামুলক ভাবে একটু জটিল এবং EDEXCEL সে তুলনায় অনেক সহজ ও মানসম্পন্ন।
৫। EDEXCEL এর বিষয়ভিত্তিক পছন্দের ধারা ক্যামব্রিজ থেকে একটু বেশী। EDEXCEL এ বিষয় সংখ্যা প্রায় ৪৭ টি এবং Cambridge এ ৪০ টির কিছু বেশী।
৬। ক্যামব্রিজ কারিকুলামে O Level ও A Level পাশ করার পরে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন কারিকুলামে পড়তে হয়, কিন্তু EDEXCEL কারিকুলামে O Level ও A Level শেষ করার পর একই কারিকুলামে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহন করা যায়।
৭। ক্যামব্রিজ শিক্ষা স্তর মাত্র ৪ টি কিন্তু EDEXCEL এ শিক্ষার স্তর আরো বেশি।
৮। ক্যামব্রিজ কারিকুলাম দীর্ঘকাল যাবৎ কার্যক্রম চালিয়ে আসায় এর পরিচিতি ও প্রসার EDEXCEL এর তুলনায় বেশি।
৯। প্রফেশনাল ট্রেনিং এ ক্যামব্রিজ থেকে EDEXCEL বেশি তৎপর ও সহযোগী।
১০। ক্যামব্রিজ শিক্ষা কার্যক্রম ও শিক্ষার ধারা EDEXCEL এর তুলনায় একটু কঠিন ও Critical.
উপর্যুক্ত বর্ণনা মতে, দু’টি শিক্ষাক্রমে যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে তা অতি সামান্য ও অমৌলিক । বাস্তবত এদের মাঝে শিক্ষাগত বা একাডেমিক উন্নয়নে তেমন কোন পার্থক্য নেই। যেহেতু উভয় বোর্ডই একই রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত এবং উভয় বোর্ডেই ছাত্র ছাত্রীরা তাদের ইচ্ছামত পাঠ্যবিষয় পছন্দ করে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারে, সেহেতু এদের মান বিশ্বব্যাপী সমানভাবে সমাদৃত, সারা বিশ্বে এ বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট গুরুত্বসহকারে মূল্যায়ন করা হয় এবং অতিরিক্ত মান সংযুক্ত হয়। সুতরাং ছাত্র ছাত্রীরা তাদের ইচ্ছামত যে কোন শিক্ষা কার্যক্রম বা কারিকুলামে অধ্যয়ন করে তারা IGCSE, GCSE বা O Level, IAL বা A Level এ কৃতকার্য হতে পারে। সুতরাং ক্যামব্রীজ বা এডেক্সেল যে কারিকুালামই হোক না কেন তা আমাদের দেশের কারিকূলামের সাথে কোন মিল বা সংগতি নেই । উভয়টি সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যম ও ন্যাশনাল কারিকুলামের বাংলাসহ দু-একটি বই পড়ানো হলেও এখানে বিদেশী লেখক দ্বারা লিখিত বই পাঠ্যপুস্তক হিসাবে নির্ধারণ করা হয় এবং তা ব্রিটিশ কাউন্সিল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। যে সকল ছেলে-মেয়ে ইংরেজী মাধ্যমে পড়া-লেখা করে তাদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উচ্চতর ডিগ্রির জন্য দেশের বাইরে অন্য কোনো উন্নত দেশে পাঠানোর অভিপ্রায় থাকে । আর এ কথা সত্য যে O Level ও A Level এ যোগ্যতা অর্জনকারী ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বিদেশে লেখা-পড়া করা অনেক সহজ ও স্বচ্ছন্দময় হয়ে থাকে ।
লেখক: প্রিন্সিপাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ০৯,২০১৯)