দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : অবৈধ পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে অন্তত ৬০ জন অভিবাসীর একটি দল মারা গেছে। যার মধ্যে ৩৭ জন বাংলাদেশি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই দলে বাংলাদেশের ৫১ জনসহ একাধিক দেশের মোট ৭৫ জন অভিবাসী ছিল।

তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি শনিবার (১১ মে) এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে মৃত ৩৭ বাংরাদেশিদের মধ্যে ছয় জনই সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তারা হলেন- মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বাসিন্দা, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই আহসান হাবিব শামীম (১৯) ও তার শ্যালক কামরান আহমদ মারুফ (২৩), ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকার মুয়িদপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), একই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ (২৪) এবং সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন (২৪)। তবে ওই গ্রামের নিহত আরেকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শনিবার (১১ মে) রাত ১টায় শাহরিয়ার আলম সামাদ তার ভাই ও শ্যালক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রায় ২ মাস আগে তার ভাই ও শ্যালক দেশ ছাড়ে।

এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জের নিহত আজিজের ভাই মফিজুর রহমান ওই উপজেলার চারজন নিহত হবার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানান।

তিনি জানান, শনিবার বেলা ৩টার দিকে তিউনিসিয়া উপকূল থেকে বেঁচে যাওয়া তার চাচা মুয়িদপুর গ্রামের দিলাল ফোন করে তাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বেঁচে ফেরা অভিবাসীদের ভাষ্যমতে, নৌকাটিতে ৫১ জন বাংলাদেশি ছাড়াও তিনজন মিশরীয় এবং মরক্কো, চাদ এবং আফ্রিকার অন্যান্য কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিল।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭০ জনের বেশি অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে রওয়ানা হন। ভূমধ্যসাগরে গিয়ে নৌকাটি ডুবে গেলে নিহত হন প্রায় ৬৫ জন অভিবাসী। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছে তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট।

গভীর সাগরে তাদের বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি নৌকায় তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়।

তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি সিল্মমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাবারের তৈরি ‘ইনফ্লেটেবেল’ নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার সকালে জারজিস শহরের তীরে নিয়ে আসে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, ঠাণ্ডা সাগরের পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের ১৪ জনই বাংলাদেশি।

ত্রিপলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী বিবিসিকে বলেন, তারা দুর্ঘটনার কথা জানেন এবং তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ চলছে। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তারা জারজিসে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

লিবিয়াতে যুদ্ধ চলায় তিউনিশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে মিশন থেকে জানানো হয়।

তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আরও জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে যাওয়ার ওই ঘটনায় শনিবার (১১ মে) তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে। যার মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি রয়েছে।

(দ্য রিপেোর্ট/এনটি/মে ১২, ২০১৯)