ফাইনাল নিশ্চিতে বাংলাদেশের টার্গেট ২৪৮
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ত্রিদেশীয় সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ২৪৮ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়েছে উইন্ডিজ। এই ম্যাচ জিতলে ফাইনালে উঠবে টাইগাররা। সোমবার (১৩ মে) ডাবলিনে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজ দলপতি জেসন হোল্ডার। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ক্যারিবীয়ানরা তোলে ২৪৭ রান। চারটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি পান তিনটি উইকেট। কিপটে বোলিংয়ে আরেকবার নাম লিখেছেন সাকিব।
টাইগারদের তৃতীয় আর সিরিজের পঞ্চম এই ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে চারটায়। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় পাঁচটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলা পেসার আবু জায়েদ রাহির। ইনজুরিতে ছিটকে পড়েছেন সাইফউদ্দিন। অনুশীলনের সময় চোট পেয়েছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন এই একটি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই টাইগার দলপতি মাশরাফি অভিষিক্ত রাহির হাতে বল তুলে দেন।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মাশরাফির বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার সুনীল আমব্রিস। ৪ বাউন্ডারিতে ১৯ বলে ২৩ রান করে স্লিপে থাকা সৌম্যর হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ক্যারিবীয়। দশম ওভারে মাশরাফির বলে ড্যারেন ব্রাভোর (৫) ক্যাচ ফেলে দেন মেহেদী মিরাজ। ১১তম ওভারে দলীয় ৫৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়। মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে আউট হন ড্যারেন ব্রাভো (৬)।
১১তম ওভারের পর ২০তম ওভারে আবার সাফল্য পায় বাংলাদেশ। এবার উইকেট শিকারে নাম লেখান কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ফিজের দারুণ ডেলিভারিতে মিড উইকেটে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন রোস্টন চেজ। বিদায়ের আগে ২৯ বলে দুই বাউন্ডারিতে তিনি করেন ১৯ রান। দলীয় ৯৯ রানে উইন্ডিজরা চতুর্থ উইকেট হারায়। আবারো আঘাত হানেন ফিজ। ২১তম ওভারের প্রথম বলে জোনাথন কার্টারকে (৩) এলবির ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার।
টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৮৫ বল পর বাউন্ডারির দেখা পায় উইন্ডিজ। ৩৮তম ওভারে ইনিংসের প্রথম ওভার বাউন্ডারির দেখা পায় ক্যারিবীয়ানরা। ইনিংসের ৪২তম ওভারে ক্রমেই টাইগারদের গলার কাঁটা হয়ে ওঠা ওপেনার শাই হোপকে বিদায় করেন মাশরাফি। ব্যক্তিগত ৮৭ রানের মাথায় উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন এই সিরিজে তৃতীয় সেঞ্চুরির দিকে ছুটে চলা হোপ। বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা চতুর্থ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হওয়া এই ক্যারিবীয়ান ১০৮ বলে ৬টি চার আর একটি ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজান। এরপর মাশরাফি বিদায় করেন উইন্ডিজ দলপতি জেসন হোল্ডারকে। ৭৬ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় ব্যক্তিগত ৬২ রান বিদায় নেন হোল্ডার।
এরপর ইনিংসের ৪৫তম ওভারে সাকিব ফিরিয়ে দেন ৭ রান করা ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে। ৪৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বল তুলে মারতে গিয়ে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়েন ১৪ রান করা অ্যাশলে নার্শ। একই ওভারে ফিজের ডেলিভারিতে এলবির ফাঁদে পড়েন ৭ রান করা রেইমন রেইফার।
টাইগার দলপতি মাশরাফি ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে তুলে নেন তিনটি উইকেট। মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ৪১ রানের বিনিময়ে পান একটি উইকেট। সাকিব ১০ ওভারে ২৭ রান খরচায় পান একটি উইকেট। সৌম্য সরকার ২ ওভারে ১৫ রান দিয়ে উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ৯ ওভারে ৪৩ রান খরচায় পান চারটি উইকেট। আবু জায়েদ রাহি নিজের অভিষেক ম্যাচে ৯ ওভারে ৫৬ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি।
এর আগে নিজেদের প্রথম ও তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দেয় উইন্ডিজরা। প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়ানরা জিতেছে ১৯৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩২৮ রানের টার্গেটে জিতেছে ৫ উইকেটের ব্যবধানে।
এদিকে, বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে উইন্ডিজকে হারিয়েছে ৮ উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে উইন্ডিজ তোলে ২৬১ রান। জবাবে তামিম-সৌম্যের দারুণ উদ্বোধনী জুটি পায় বাংলাদেশ। এরপর সাকিব আর মুশফিকের ব্যাটে ভর করে ম্যাচ জিতে নেয় ৮ উইকেটে। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
তিন ম্যাচে দুই জয় এবং এক পরাজয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে উইন্ডিজ টেবিলের শীর্ষে। আর এক জয়, এক ড্রয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দুইয়ে। আর কোনো ম্যাচ না জিতে তলানীতে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। এই ম্যাচ জিতলে সরাসরি ফাইনালে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। আর দুই ম্যাচ জিতে আগেই ফাইনালে পা দিয়ে রেখেছে উইন্ডিজ। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে উইন্ডিজ দলে অভিষিক্ত হয়েছেন রেইমন রেইফার।
উইন্ডিজ একাদশ: শাই হোপ, সুনীল অ্যামব্রিস, ড্যারেন ব্রাভো, রোস্টন চেজ, জোনাথন কার্টার, জেসন হোল্ডার, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, অ্যাশলে নার্শ, শেলডন কটরেল, কেমার রোচ, রেইমন রেইফার।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, মেহেদি হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ রাহি এবং মোস্তাফিজুর রহমান।
(দ্য রিপেোর্ট/এনটি/মে ১৩, ২০১৯)