মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের উপর হামলা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কমিটিতে স্থান না পাওয়া (পদবঞ্চিত) নেতারা হামলা শিকার হয়েছেন। ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন কমিটি চেয়েছিলেন তারা।
জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে আটটায় কমিটিতে পদবঞ্চিতরা মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শোভন-রব্বানীর অনুসারীরা তাদের ব্যানার কেড়ে নেয়।
এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছুড়াছুড়ি এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে রোকেয়া হলের সাবেক সভাপতি ও ডাকসুর ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার, রোকেয়া হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সম্পাদাক তিলোত্তমা শিকদার এবং ডাকসুর সদস্য তানভীর শাকিলসহ অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হয়।
এরআগে বিকালে কমিটি ঘোষণার পরপরই পদবঞ্চিতরা মধুর ক্যান্টিনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। তখন ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান আল ইমরান, গত কমিটির অর্থ-সম্পাদক রাকিব হোসেন, জহু হলের আমির হামজা, শাকিলসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার মুখে টিকতে না পেরে পদবঞ্চিতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন।
সাবেক কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু বলেন, ঘোষিত কমিটি একটি বিতর্কিত কমিটি। এ কমিটিতে কোটা আন্দোলনকারী, শিবিরসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তদের স্থান দেয়া হয়েছে। যারা অতীতে ছাত্রলীগের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, তাদেরকে কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি। আমরা চাই বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে দ্রুত নতুন কমিটি দেয়া হোক।
কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডাকসু সদস্য এবং সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে একটি হলের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসাবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও আমাকে এই কমিটিতে একই পদে রাখা হয়েছে।’
‘‘আমি এই পদ মানি না। আমি এই পদ থেকে পদত্যাগ করবো। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা এতোদিন রাজনীতি করেনি, যারা পকেট ম্যান, যারা তাদের নিজেদের পকেটে নিয়ে ব্যস্ত তাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে কিন্তু আমাকে অবমূল্যায়ন করে আবার সেই পদে রাখা হয়েছে। আমি এই কমিটি কোনোভাবেই মানি না।’’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গত বছরের ১১-১২ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগের ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন। সে সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করার কথা থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভিন্ন ইস্যুর কারণে প্রায় আড়াই মাস পর (৩১ জুলাই) রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এরপর দফায় দফায় নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পাশাপাশি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার তাগিদ দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ১৩,২০১৯)