পিবিআই’র চূড়ান্ত প্রতিবেদন
রাউধা আত্মহত্যা করেছিলেন
রাজশাহী প্রতিনিধি : মালদ্বীপের নীলনয়না মডেল রাউধা আতিফ (২২) তার প্রেমিক শাহী গনির ওপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছিলেন উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ১৮ মে পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক সাইদুর রহমান আদালতে এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইদুর রহমান জানান, তিনি মামলাটির চতুর্থ নম্বর তদন্ত কর্মকর্তা। মামলাটি একে একে শাহমখদুম থানার পরিদর্শক, সিআইডি পরিদর্শক, পিবিআই পরিদর্শক এবং সর্বশেষে তিনি তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আদালত তা গ্রহণ করেছেন। এখন শুনানির দিন দেবেন।
তিনি আরো জানান, রাউধাকে হত্যার কোনো আলামত তদন্তে পাওয়া যায়নি। দু’বার ময়নাতদন্ত, ভিসেরা রিপোর্ট, সিসি টিভি ফুটেজ- সবকিছু তদন্ত করে তার আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত ৮ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন তিনি আদালতে দাখিল করেছেন।
সাইদুর রহমান জানান, রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মালদ্বীপের মডেল রাউধা তার কক্ষে একা থাকতেন। কারণ তিনি মদ্যপান করতেন, গান করতেন ও পশুপ্রেমিক ছিলেন। সিসি টিভির ফুটেজে ওইদিন তার কক্ষে অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
আন্তর্জাতিক সাময়িকী 'ভোগ'র মডেল রাউধা আতিফ প্রেমে ব্যর্থ হয়েই আত্মহত্যা' করেছিলেন বলে এর আগেও চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা।
২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে রাউধা আতিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, লন্ডনপ্রবাসী মালদ্বীপের তরুণ শাহী গণির সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল রাউধার। ঘটনার দিন রাত ২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন রাউধা। সেখানে শাহী গণিকে রাউধা বলেছিলেন, ‘এখন আমাদের বিয়ে করা উচিত।’ কিন্তু শাহী গণি তাকে প্রত্যাখান করেন। এরপর ‘শাহী গনি ইউ হ্যাংড আপ’ বলে মেসেজ পাঠান রাউধা।
অবশ্য রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ইসলামী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী কাশ্মিরের নাগরিক সিরাত পারভীন মাহমুদকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ।
তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, বিদেশী নাগরিক হওয়ায় এই মামলায় শাহী গণির বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা সম্ভব হয়নি। শাহী গনি সরাসরি রাউধাকে আত্মহত্যার বিষয়ে কিছু বলেননি। তাছাড়া তারা দু’জনই প্রাপ্তবয়স্ক এবং দুই দেশে বসবাস করছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/মে ২৯,২০১৯)