স্পোর্টস ডেস্ক, দ্য রিপোর্ট: মালিঙ্গার শ্রীলঙ্কা ৩৪ রানে হারালো মোহাম্মদ নবীর আফগানিস্তানকে।

দারুণ শুরুটা বৃষ্টির কারণে বিপর্যয় হয়ে দেখা দেয় শ্রীলঙ্কার জন্য । প্রথম ১০ ওভারে এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৭৯ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু হঠাৎ করেই বিপর্যয়। মোহাম্মদ নবীর স্পিনে টালমাটাল হলো তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। কার্ডিফে এরপর বৃষ্টির কারণে ৪১ ওভারে কমে যাওয়া ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ২০১ রানে অলআউট হয় তারা। কিন্তু বৃষ্টি আইনে আফগানরা পায় ১৮৭ রানের টার্গেট।

মোহাম্মদ নবির দারুণ বোলিংয়ে হাতের নাগালে লক্ষ্য পেয়েছিল আফগানিস্তান। সবুজ ঘাসের উইকেটে সেই রান করতে যে ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিং, চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা প্রয়োজন ছিল তা দেখাতে পারেনি গুলবাদিন নাইবের দল। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে পরাজয়ের চোখ রাঙানি এড়িয়ে শ্রীলঙ্কাকে দারুণ জয় এনে দিলেন নুয়ান প্রদিপ।


বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৩৪ রানে জিতেছে দিমুথ করুনারত্নের দল।

কার্ডিফ ওয়েলস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা ইনিংসের ৩৩ ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। সে সময় তাদের স্কোর ছিল ১৮২/৮। বৃষ্টিতে লম্বা সময় খেলা বন্ধ থাকায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪১ ওভারে। শেষ দুই উইকেট দ্রুত হারিয়ে ৩৬ ওভার ৫ বলে ২০১ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস।

ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য ১৮৭ রান লক্ষ্য পেয়েছিল আফগানিস্তান। ৩২ ওভার ৪ বলে তাদের ১৫২ রানে থামিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা।

এই মাঠে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি শ্রীলঙ্কা। ১৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়ে হারে ১০ উইকেটে। সেই ম্যাচে পেসারা ভুগিয়েছিল লঙ্কানদের, এবার ভোগাল আফগান স্পিনাররা।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল শ্রীলঙ্কা। শুরু থেকে ঝড় তুলেছিলেন কুসল পেরেরা। দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। অধিনায়ককে ফিরিয়ে ৯২ রানের জুটি ভাঙেন নবি। লাহিরু থিরিমান্নেকে বোল্ড করে ৫২ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিও ভাঙেন এই অফ স্পিনার।

থিরিমান্নেতে ফেরানোর পর সেই ওভারে কুসল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জলো ম্যাথিউসকেও থামান নবি। ডানহাতি দুই ব্যাটসম্যান ধরা পড়েন স্লিপে। ২ রান আসে মেন্ডিসের ব্যাট থেকে, টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে ফিরেন ম্যাথিউস।

রানের খাতা খোলার আগেই ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফিরিয়ে দেন হামিদ হাসান। ১ উইকেটে ১৪৪ থেকে শ্রীলঙ্কার স্কোর পরিণত হয় ১৪৯/৫-এ।

থিসারা পেরেরার রান আউট দলের বিপদ বাড়ায় আরও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার।

প্রচুর ওভার ছিল হাতে। দেখেশুনে খেলতে পারতেন ইসুরু উদানা। দৌলত জাদরানের ওপর চড়াও হতে গিয়ে ফিরলেন লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে।

একের পর এক সঙ্গী ফিরে গেলেও অবিচল ছিলেন কুসল পেরেরা। ঝুঁকি নিতে গিয়ে ফিরলেন তিনিও। রশিদ খানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে হলেন কট বিহাইন্ড। ৮১ বলে খেলা বাঁহাতি ওপেনারের ৭৮ বলের ইনিংস গড়া ৮ চারে। তার বিদায়ের চার বল পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়।

লম্বা সময় অপেক্ষার পর খেলা শুরু হলে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি শ্রীলঙ্কার ইনিংস। লাসিথ মালিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন দৌলত। নুয়ান প্রদিপকে বোল্ড করে ২৫ বল বাকি থাকতে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেন রশিদ।

শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেওয়া নবি ৩০ রানে নেন ৪ উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন রশিদ ও দৌলত।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৩৬.৫ ওভারে ২০১ (করুনারত্নে ৩০, কুসল পেরেরা ৭৮, থিরিমান্নে ২৫, কুসল মেন্ডিস ২, ম্যাথিউস ০, ডি সিলভা ০, থিসারা ২, উদানা ১০, লাকমল ১৫*, মালিঙ্গা ৪, প্রদিপ ০; দৌলত ৬-০-৩৪-২, হামিদ ৭-০-৫৩-১, মুজিব ৩-০-১৯-০, নবি ৯-০-৩০-৪, নাইব ৪-০-৩৮-০, রশিদ ৭.৫-১-১৭-২)

আফগানিস্তান: (লক্ষ্য ৪১ ওভারে ১৮৭) ৩২.৪ ওভারে ১৫২ (শাহজাদ ৭, জাজাই ৩০, রহমত ২, শাহিদি ৪, নবি ১১, নাইব ২৩, নাজিবউল্লাহ ৪৩, রশিদ ২, দৌলত ৬, হামিদ ৬, মুজিব ১*; মালিঙ্গা ৬.৪-০-৩৯-৩, লাকমল ৬-০-২৭-০, উদানা ৬-০-২৮-১, প্রদিপ ৯-১-৩১-৪, থিসারা ৪-০-১৯-১, ডি সিলভা ১-০-৭-০)

ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কা ৩৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: নুয়ান প্রদিপ

(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/৪জুন,২০১৯)