বিতর্কিত আম্পায়ারিং
দমবন্ধ হওয়া ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়
স্পোর্টস ডেস্ক, দ্য রিপোর্ট: বিশ্বকাপে রোমাঞ্চকর ম্যাচই উপহার দিলো অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে টপ অর্ডারে ধস নামিয়ে অজিদের অল্পতে গুটিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলো ক্যারিবীয়রা। স্মিথ-কোল্টার নাইলের প্রতিরোধে তা আর হয়নি। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে অজিদের ছুঁড়ে দেওয়া ২৮৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরটা টপকে জয়ের সম্ভাবনা ঠিকই জাগিয়ে তুলেছিলো হোল্ডারের দল। শেষ দিকে ব্যাটসম্যানদের আত্মহত্যায় সেই ম্যাচ তারা হেরে গেছে ১৫ রানে! আর অস্ট্রেলিয়া জিতলো টানা দ্বিতীয় ম্যাচ।
বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো ছিলো না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দ্বিতীয় ওভারে ১ রানে ফিরে গেছেন এভিন লুইস। বিপদের আভাসটা টের পাওয়া যায়নি তখনো। ক্রিস গেইল কিছুক্ষণ মেরে খেললে তার ছোট ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে বিতর্ক সঙ্গী হয়ে।
গেইলকে ঘিরে আলাদা পরিকল্পনার কথা বলেছিলো অস্ট্রেলিয়া। অথচ সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি ছিলেন আম্পায়াররা! হাত খুলে মারতে থাকা গেইলকে তিনবারই আউট দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন আম্পায়াররা। দুইবার গেইল বেঁচেছেন রিভিউ নিয়েই। তৃতীয় বারেও মিচেল স্টার্কের বলে আবার আউটের সিদ্ধান্ত জানালে সেবারও রিভউ নিয়েছিলেন গেইল। কিন্তু এবার আর বাঁচার সুযোগ ছিলো না। লেগ বিফোর হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। তবে এই বলটিতে সঙ্গী ছিলো বিতর্ক! আগের বলটি বিশাল নো হলেও তা চোখে পড়েনি আম্পায়ারের। না হলে যে বলে আউট হয়েছিলেন তা ছিলো ফ্রি হিটের বল!
দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও ধরে খেলার চেষ্টা করেছেন শাই হোপ ও নিকোলাস পুরান। পুরানের ইনিংসটি ৪০ রানে থামিয়ে দিয়েছিলেন লেগ স্পিনার জাম্পা। তবে অপরপ্রান্ত আগলে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন হোপ।
মাঝে হেটমায়ার ২১ রানে রান আউটে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে তাদের উত্তরণে সহায়তা করে হোপ-হোল্ডার জুটি। ৬৮ রানে হোপকে বিদায় দিয়ে তাদের ওপর চাপটা আরও বাড়িয়ে তুলে অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সের বলে তার বিদায়ের পর হোল্ডার ধরে খেলতে থাকেন অপরপ্রান্ত। আন্দ্রে রাসেল নেমে দুটি চার ও এক ছয়ে ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে মিচেল স্টার্কের বলে ম্যাক্সওয়েল তালুবন্দী করলে তা রোমাঞ্চকর ম্যাচে মোড় নেয় শেষ পর্যন্ত।
যখন ৩০ বলে ৩৮ রান প্রয়োজন তখন আত্মহননের পথ বেছে নেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ও জেসন জোল্ডাররা। ব্র্যাথওয়েট দারুণ কিছু শটে ১৬ রান তুলে ক্যাচ আউটে ফিরলে স্টার্কের একই ওভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫১ রান করা হোল্ডার। এরপর আর প্রত্যাশিত জয়টা পেতে কষ্ট হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ক্যারিবীয়রা তুলতে পারে ৯ উইকেটে ২৭৩ রান। ৪৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার মিচেল স্টার্ক। দুটি নেন প্যাট কামিন্স। ম্যাচসেরা ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়াকে উদ্ধার করা নাথান কোল্টার নাইল।
নটিংহামের এই ম্যাচটার শুরু থেকেই পরতে পরতে ছিলো রোমাঞ্চ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্যারিবীয়দের বাউন্সারে বিপর্যস্ত হয়ে টপ অর্ডারে ধস নেমেছিলো অজিদের। এক পর্যায়ে পাকিস্তানের মতো অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিলো। ৩৪ রানে বিদায় নিয়েছিলেন ৪জন। সেই অস্ট্রেলিয়াই স্টিভেন স্মিথের দৃঢ়তায় ও পেসার নাথান কোল্টার নাইলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২৮৮ রানের লড়াকু পুঁজি দাঁড় করিয়েছে শেষ পর্যন্ত। স্মিথের ১০৩ বলে ৭৩ আর নাথান কোল্টার নাইলের ৬০ বলে ৯২ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটাই ছিলো চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত্তি।
৬৭ রানে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। দুটি করে উইকেট নেন ওশানে থমাস, শেলডন কট্রেল ও আন্দ্রে রাসেল।
( দ্য রিপোট/ টিআইএম/৬ জুন,২০১৯)