বরগুনায় সৎ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা, মা দগ্ধ
বরগুনা প্রতিনিধি: জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সৎ বাবা। এ সময় দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ঘরে ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে কারিমা আক্তার (১০) এবং দগ্ধ হন মা সাজেনুর বেগম (৩০)।
বুধবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক সৎ বাবা মো. বেল্লাল হোসেন (৩৫) পলাতক রয়েছেন। তার বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার ছকিনা এলাকায়।
বৃহস্পতিবার সকালে আশংকাজনক অবস্থায় সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
দগ্ধ সাজেনুরের চাচাতো ভাই মো. ইব্রাহিম জানান, বেল্লাল হোসেনের সঙ্গে প্রায় দেড় বছর আগে সাজেনুরের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায় একাধিকবার সালিশবৈঠক হয়। সালিশে বেল্লাল হোসেন মা-মেয়েকে আগুনে পুড়ে মারার হুমকিও দিয়েছিলেন।
সাজেনুরের ফুফাতো বোন ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বোন সাজেনুর আহতাবস্থায় বলেছেন, রাতে বেল্লাল ঘর থেকে বাহিরে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। এ সময় সাজেনুর ও তার মেয়ে কারিমা আক্তার ঘর থেকে বেরোতে চাইলে মা ও মেয়েকে রামদা দিয়ে ধাওয়া করে। এতে তারা বের হতে পারেননি। আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মেয়ে কারিমা মারা যান এবং আর সাজেনুর শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে যায়।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, সাজেনুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে আশংকাজনক অবস্থায় সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পাথরঘাটা থানার ওসি হানিফ শিকদার বলেন, মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীন বলেন, সাজেনুর ও বেল্লালের দাম্পত্য বিষয় নিয়ে একাধিকবার সালিশবৈঠক হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ১৩, ২০১৯)