শেরপুরে অন্তঃসত্ত্বাকে বেঁধে নির্যাতন : ফেঁসে যাচ্ছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলায় গাছে বেঁধে অন্তঃসত্ত্বাকে নির্যাতন ও গর্ভের সন্তান নষ্ট করার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় নকলা থানা পুলিশের ওসি কাজী শাহনেওয়াজ ও এসআই ওমর ফারুককে শোকজ করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে জেলা পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ড. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি নকলা শহরের কায়দা এলাকার ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বামীসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
একইসঙ্গে তিনি ওই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং এজাহারনামীয় আসামিদের বাইরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারো মদদ থাকলে তাদেরকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।
এছাড়া এ ঘটনায় নকলা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি নাসিমা আক্তারকে (৩৯) পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারিক হাকিম শরীফুল ইসলাম খান আগামী রোববার (১৬ জুন) রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে মামলার অপর আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে অতিরিক্ত ডিআইজি ড. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়ার পরিদর্শনের সময় পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলে জেলা মহিলা পরিষদ সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মীর নেতৃত্বে উপস্থিত হওয়া নেতৃবৃন্দ অতিরিক্ত ডিআইজির কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায়বিচার দাবি করেন। তারা নকলা থানা পুলিশের ওসি এবং এসআই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফলতির অভিযোগ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ায় পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে তথ্যানুসন্ধানে এসেছি। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সদর সার্কেল) প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাজেই নির্যাতিতা নারীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুলিশের কারও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
অন্যদিকে একইদিন বিকেলে আদালতে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী শফিউল্লাহর দায়ের করা নালিশি মামলার বিষয়েও ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন জামালপুর পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুজ্জামান।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ১৪, ২০১৯)