আফগানদের নিয়ে ছেলেখেলা ইংল্যান্ডের
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার সময় যেনো হেসেই খুন। ওদিকে ড্রেসিংরুমে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে শেষ জো রুট, জনি বেয়ারস্টোরা। ভাবটা এমন যেনো, আফগানদের সঙ্গে আর কতো করবো?
তাদের তো এমন হাসিই মানায় মুখে। কারণ মরগ্যান ৭১ বলে রেকর্ডগড়া ১৪৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরার সময় ইংল্যান্ডের দলীয় সংগ্রহ ৪৭ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রান। তাই ছক্কাবৃষ্টি করে সাজঘরে ফেরার সময় রাজ্যের হাসি ও সন্তুষ্টি ইংলিশ অধিনায়কের চোখেমুখে।
পরে মঈন আলির ঝড়ে এবারের আসরের দলীয় সর্বোচ্চ ৩৯৭ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নেমেও প্রথম ইনিংসের মতো হাসি আর হাসি ইংলিশ খেলোয়াড়দের মুখে। ৪১তম ওভারের শেষ বলে উইকেটে এসে, মুখোমুখি প্রথম বলেই যখন ছক্কা হাঁকান, তখন বোলার আদিল রশিদ কিংবা জো রুটের মুখে চিন্তার বদলে হাসির ছাপই দেখা গেলো।
তখনও তাদের মুখে হাসিই মানায়। কেননা শেষের ৯ ওভারে যে জয়ের জন্য আফগানদের করতে হতো ১৯৪ রান। যা অসাধ্যের কাছাকাছিই বলা চলে। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানিস্তান।
নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে ১৫০ রানের বিশাল ব্যবধানের জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে স্বাগতিকরা। অন্যদিকে ৫ ম্যাচ খেলে এখনো জয়ের দেখা পায়নি আফগানিস্তান।
৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কখনোই মনে হয়নি এ লক্ষ্য ছুঁতে পারবে আফগানরা। তবু ওপেনার নুর আলি জাদরান ব্যতীত প্রায় সবাই রান করেছেন কমবেশি। ত্রিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন হাশমতউল্লাহ শহিদি। তার ১০০ বলের ইনিংসে ৫টি চারের সঙ্গে ছিল ২টি ছয়ের মার। এছাড়া সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান ৪৮ বলে ৪৪, অধিনায়ক গুলবদিন নাইব ২৮ বলে ৩৭ ও রহমাত শাহ খেলেন ৭৪ বলে ৪৬ রানের ইনিংস।
শেষদিকের ব্যাটসম্যানরা তেমন কিছু করতে না পারায় বড় হয়নি আফগানদের সংগ্রহ, তাদের দলীয় ইনিংস থেমে যায় ২৪৭ রানে। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন আদিল রশিদ ও জোফ্রা আর্চার। এছাড়া মার্ক উডের শিকার ২টি উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তাদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছেন বেয়ারস্টো-রুট মরগানরা। অধিনায়ক মরগানের ৭১ বলে ১৪৮ রানের ভয়ংকর রেকর্ডগড়া ক্যাপ্টেনস নকে ভর করে ৬ উইকেটে ৩৯৭ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়।
জনি বেয়ারস্টো একটুর জন্য সেঞ্চুরি পাননি। ৯৯ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ইংলিশ ওপেনার আউট হন ৯০ রানে। ৩১ বলে ২১ করে সাজঘরে ফেরেন জেমস ভিন্স।
দলীয় ৪৪ রানের মাথায় ভিন্স আউট হওয়ার পর বেয়ারস্টো আর জো রুট দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ১২০ রান। এরপরই সবচেয়ে ভয়ংকর জুটিটা মাঠে দাঁড়িয়ে যায়।
তৃতীয় উইকেটে মরগানের সঙ্গে রুট ১০১ বলে গড়েন ১৮৯ রানের জুটি। গুলবাদিন নাইবের বলে রুটের আউটে ভাঙে এই জুটি। ৮২ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন ৮৮ রান।
তবে মাঠে আসার পর থেকে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত রীতিমত তান্ডব চালিয়ে গেছেন মরগান। ৭১ বলে ১৪৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে ইংলিশ অধিনায়কও হন নাইবেরই শিকার।
তবে তার আগে বিশ্বরেকর্ড গড়া হয়ে গেছে মরগানের। ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ১৭টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে কোনো ব্যাটসম্যানের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড এটিই।
শেষদিকে বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিতে পেরেছে আফগানিস্তান। ৯ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট ফেলে দেয় তারা। এরপর আরও কয়েকটি উইকেট হারানোয় চারশ হয়নি ইংল্যান্ডের।
আফগানিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন গুলবাদিন নাইব আর দৌলত জাদরান।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ১৭,২০১৯)