লড়াই করে হারল বাংলাদেশ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সামনে রানের পাহাড়, জিততে হলে করতে হবে ৩৮২ রান। অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণের সামনে এই বিশাল রান তাড়া করে জেতা বেশ কঠিন। দুর্দান্ত বাংলাদেশ এই ম্যাচটি জিততে পারেনি ঠিক, তবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ভিত ভালোভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার নটিংহামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ৪৮ রানে। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ব্যাটিং ঝড়ে কিছু সময়ের জন্য হলেও ম্যাচটিতে জয়ের আশা জেগেছিল লাল-সবুজের দলের। যদিও শেষ পর্যন্ত পারেনি তারা।
হারলেও মন জয় করে নিয়েছেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। বিশেষ করে পঞ্চম উইকেট জুটিতে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ১২৭ রানের দারুণ একটি পার্টনারশিপ গড়ে আশা জাগিয়েছিলেন। মাহমুদউল্লাহ ৫০ বলে ৬৯ রানের চমৎকার একটি ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। আর মুশফিক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন অসাধারণ সেঞ্চুরি করে। তিনি ৯৭ বলে ১০২ রান করেন।
তবে শুরুতে সৌম্যের রান আউটটা ছিল দুর্ভাগ্যজনক। আরো দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে সাকিবের আউট। ধারাবাহিকভাবে দারুণ শুরু করেন সাকিব। কিন্তু ওয়ার্নারের কাছে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।
অর্ধশতক করে রানটাকে বড় করতে পারেননি তামিম। স্টার্কের বলে বোল্ড হন তিনি। ৭৪ বলে ৬২ রান করেন তিনি। লিটন দাস এসে থিতু হয়ে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ১৭ বলে ২০ রানে আউট হন তিনি।
সৌম্যের পর তামিমের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব। শুরুটা আগের ম্যাচগুলোর মতোই ছিল। দেখেশুনে শুরুটা করেন সাকিব। কিন্তু সাকিবকে নিয়ে আলাদা প্রস্তুতি ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ওই পরীক্ষায় পাস করলেন ফিঞ্চ-ওয়ার্নাররা। স্টোয়িনসের স্লোয়ারটা মিড অফের দিকে তুলে দেন সাকিব। ওয়ার্নার ভুল করেননি। ৪১ রানে সাকিব ক্যাচ দেন ওয়ার্নারের কাছে।
চতুর্থ ওভারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হলেন সৌম্য। কামিন্সের বলটা মিড অনে ঠেলে দিয়েই রান নিতে চাইলেন তামিম। ক্ষিপ্র গতিতে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন ফিঞ্চ। ততক্ষণে জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি সৌম্য।
মাশরাফির বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ম্যাচের শুরুর দিকের ঘটনা। সাব্বির তা ধরতে পারেননি। গুনে গুনে মাশুল দিল বাংলাদেশ। সেই ওয়ার্নার থামলেন ১৬৬ রানে। ওয়ার্নারের মতো খেলেছেন খাজাও। তিনি থেমেছেন ৮৯ রানে। শেষ দিকে ম্যাক্সওয়েল তুললেন ঝড়। মাত্র ১০ বলে করেছেন ৩২ রান! এতেই রান হয়ে গেল পাঁচ উইকেটে ৩৮১।
বোলারদের মধ্যে আজ সফল ছিলেন সৌম্য সরকার। আট ওভারে ৫৮ রান দিয়ে তিন উইকেট লাভ করেন। তিন উইকেট বললে বলাটা কম হবে। সৌম্য নিয়েছেন ফিঞ্চ, ওয়ার্নার ও খাজার উইকেট। অন্য দুই উইকেটের একটি নিয়েছেন মুস্তাফিজ, অন্যটি হয়েছে রান আউট।
৪৯ ওভার পর বৃষ্টি শুরু হয়। পরে খেলা প্রায় ২০ মিনিটের মতো বন্ধ ছিল। পরে খেলা আবার শুরু হয়। শেষ ওভারটি করেন মুস্তাফিজুর রহমান।
নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসটা জিতল অস্ট্রেলিয়াই। অ্যারন ফিঞ্চ ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। ২০ ওভার পর্যন্ত ফিঞ্চ আর ওয়ার্নারের জুটি ভাঙা গেল না। মাশরাফি-মুস্তাফিজ-সাকিব-মিরাজ নন, জুটিটা ভাঙলেন সৌম্য! ২১তম ওভারে সৌম্যর বলে রুবেলকে ক্যাচ দিলেন ফিঞ্চ। তখন অস্ট্রেলিয়ার রান এক উইকেটে ১২১।
ওয়ার্নারকে সহজে থামানো গেল না। ১৪৭ বলে ১৬৬ রান করেন তিনি। যার মধ্যে ছিল ১৪টি চার ও পাঁচটি ছয়। খাজাকে নিয়ে ওয়ার্নার ঝড়ের বেগে রান তুললেন। ৩১৩ রানে এসে ওই জুটি ভাঙে। পরে নামেন ম্যাক্সওয়েল। শুরু করেন নতুন ঝড়। মাত্র ১০ বলে করেন ৩২ রান। যার মধ্যে ছিল তিনটি ছয় ও দুটি চারের মার। দুর্দান্ত রান আউটে ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান রুবেল।
৪৯তম ওভার শেষেই নামে বৃষ্টি। তখন মাঠে ছিলেন স্টোয়নিস ও কেরি।
মাশরাফি বিন মুর্তজা দলবল নিয়ে ফিল্ডিংয়ে নামার আগে জানিয়ে দিলেন, দলে এসেছে পরিবর্তন। ইনজুরির কারণে দলে নেই সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক।
মাশরাফি আট ওভারে দিয়েছেন ৫৬ রান। মুস্তাফিজ নয় ওভারে দিয়েছেন ৬৯ রান। সাকিব ছয় ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান। পঞ্চম ওভারে একটা সুযোগ এসেছিল ওয়ার্নারকে আউট করার। মাশরাফির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছিলেন ওয়ার্নার। তবে সাব্বির তা ধরতে পারেননি।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম /জুন ২১,২০১৯)