কার্যতালিকা থেকে বাদ খালেদার রিট
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার করা রিটের শুনানির কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো: আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটটি আজ শুনানির জন্য আসে।
এরপর দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতকে বলেন, এ মামলাটি দুদকের করা তাই এ রিটের শুনানি দুদকের মামলা শোনার এখতিয়ারভুক্ত হাইকোর্ট বেঞ্চে হতে পারে। এ বেঞ্চে তো দুদক সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় না।
এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, মামলাটি দুদকের করা কিন্তু যে প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছে তা দুদক সংশ্লিষ্ট কিছু নয়। তাই রিটটি এই বেঞ্চে শুনানিতে কোন বাধা নেই। এরপর এ রিটের বিষয়টি শুনানির কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ১১ জুন খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির নির্দেশ দেন। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রিটটি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপ মো: আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করেন।
এর আগে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৬ মে হাইকোর্টে রিট করেন কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া। গত ২৭ মে এই রিটে পক্ষভুক্ত হয় দুদক।
এ রিট করার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘‘এ রিট আবেদনে নাইকো মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এবং আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে। আর গত ১২ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তা আইন এবং সংবিধান পরিপন্থী। কারণ, সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, কোনো বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে।
আর ফৌজদারী কার্যবিধিতে (সিআরপিসি) স্পষ্টভাবে বলে দেয়া আছে যে কোথায় কোথায় আদালত স্থানান্তরিত হতে পারে। এক্ষেত্রে সিআরপিসির ৯ এর (১) ও (২) ধারায় এটা উল্লেখ নাই যে কারাগারে কোর্ট স্থাপিত হতে পারে। তাই কারাগারের একটি কক্ষে উন্মুক্তভাবে বিচার হতে পারে না বিবেচনায় ন্যায় বিচার প্রাপ্তির আসায় হাইকোর্টে রিটটি করা হয়েছে।’’
দুর্নীতির পৃথক দুই মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে ছিলেন। সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর তেজগাঁও থানায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নাইকো মামলাটি করে। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
তবে আসামিপক্ষ এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট ওই বছরের ৯ জুলাই এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন। এর প্রায় সাত বছর পর ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট সে রুল নিষ্পত্তি করে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। পরে এ মামলায় আত্মসমর্পণ করে আদালত থেকে জামিন নেন খালেদা জিয়া।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৩,২০১৯)