বৃক্ষমেলা তো নয় যেন বিশাল আম বাগান
![](https://bangla.thereport24.com/article_images/2019/06/24/Screenshot_1.jpg)
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে গত ২০ জুন শুরু হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলা, যা পরিণত হয়েছে বিশাল আম বাগানে। মেলার প্রতিটি স্টলে বিভিন্ন প্রজাতির আমের চারা সাজিয়ে রেখেছেন মালিকরা।
ড্রামে তৈরি কলমের গাছে থোকায় থোকায় আম শোভা পাচ্ছে, যা সহজেই দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। মেলা উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী নিজেই গাছে ঝুলে থাকা এমন আম দেখে আকৃষ্ট হয়েছিলেন।
মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলায় দেশের নামিদামি নার্সারি মালিকরা স্টল নিয়ে গাছের পসরা সাজিয়েছেন। দেশি-বিদেশি প্রায় হাজার প্রজাতির গাছ স্থান পেয়েছে এবারের মেলায়।
গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০১৯ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি মেলার বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। একই সঙ্গে তিনি গাছে ঝুলে থাকা আম নেড়েচেড়ে দেখেন।
সরেজমিন বৃক্ষমেলা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, সেখানে দেশের সরকারি-বেসরকারি ১৭২টি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। দেশের নামিদামি নার্সারি মালিকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফল, ফুলসহ হাজার প্রজাতির গাছের চারা সাজিয়ে বসেছেন ক্রেতাদের জন্য।
বৃক্ষমেলায় স্টল নিয়েছে কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারি। কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার খন্দকার শরিফুল আলম রানার সঙ্গে।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমের এখন অনেক জাত রয়েছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বিভিন্ন জাতের আম আবিষ্কার করছেন। দেশে এখন প্রায় সাড়ে তিনশ জাতের আম রয়েছে। এক নার্সারিতে সব জাতের চারা পাওয়া সম্ভব না।
তিনি বলেন, আম, ফুল, ফল, সবজি, বনজ, ঔষধি মিলে এ বছর ১ কোটি চারা তৈরি করেছি। এ মেলা ছাড়াও সারা বছর এসব চারা বিক্রি করি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাড়িতে যারা ছাদবাগান করছেন তাদেরও আমরা চারা সাপ্লাই দেই।
খন্দকার শরিফুল বলেন, এ মেলায় শুধু গাছ বিক্রিই নয়, অনেক অর্ডারও নেন। গত বছর তারা ৯০ লাখ গাছের চারা তৈরি করেছিলেন। বিক্রিও ভালো হয়েছিল। আশা করছেন এবারও ভালো সাড়া পাবেন।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসিন্দা শাজাহান তালুকদার ২৫ হাজার টাকা দিয়ে খিরসাপাত, ব্যানানা ম্যাংগো ও হাড়ি ভাঙা জাতের তিনটি আমগাছ কিনেছেন। প্রতিটি গাছে প্রায় ১৫/২০টি করে আম ধরে আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আম ছাড়াও জামরুল, কতবেল, আতা, মেওয়া ও করমচার চারা নিয়েছেন। বাড়ির ছাদ বাগানে এগুলো যুক্ত হবে।
কথা হয় পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সহকারী বন সংরক্ষক খন্দকার মো. জাকারিয়ার সঙ্গে। মেলার তথ্য কেন্দ্রে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছেন। তাছাড়া শহরের মানুষ এখন ছাদে বাগান করা শিখেছেন। সবাই এখন ফরমালিনমুক্ত টাটকা ফল খেতে চান। বাড়ির ছাদে নিজে গাছ রোপন করে ফল খাওয়ার মজাই আলাদা।
তিনি আরও বলেন, ১০ বছর আগেও মানুষ এত সচেতন ছিল না। নার্সারি মালিকদের ট্রেনিং দিয়ে সচেতন করা হয়েছে বলেই আজ বৃক্ষরোপন অভিযানে বিপ্লব ঘটছে। মেলায় প্রতিদিন ১০২টি স্টল এবং ৭০টি প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকার চারা বিক্রি হচ্ছে।
আমরা আজ ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা কেজি দরে সুস্বাদু আম খেতে পারছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৃক্ষ রোপন সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্যই এই মেলার আয়োজন।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ২৪, ২০১৯)