দানবীর রণদা প্রসাদ হত্যায় মাহবুবুরের ফাঁসি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: একাত্তরে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলেসহ সাতজনকে হত্যা মামলায় টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে একমাত্র আসামি মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার ১১টা ৪৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
সকাল ১০ টা ৫২ মিনিটে ২৩৫ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। এরপর ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আমির হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার রায় পড়েন। চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত, মোকলেসুর রহমান বাদল, জেয়াদ আল মালুম ও তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার সঙ্গে নিহত ভবানী প্রসাদ সাহার স্ত্রী শ্রীমতি সাহা, ছেলে রাজিব প্রসাদ সাহা ও মহাবীর পতিও আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
বাবা ও দাদাকে হারানো রাজীব প্রসাদ সাহা এই রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবারের ওপর এটা একটা বোঝা হয়ে ছিল। আজ আমরা বিচার পেলাম।’
রণদা প্রসাদ সাহার পুত্রবধূ বলেন, ‘অত্যাচারের বিচার পেয়েছি, স্বাধীনতার এত বছর পর হলেও উত্তর পেয়েছে আগামী প্রজন্ম। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা লজ্জাজনক, মর্মান্তিক। আরপি সাহার মতো মহান একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। তার বিচারে এ রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই।’
তবে আসামির আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, এই রায়ে তারা সংক্ষুব্ধ, তারা আপিল করবেন।
গত ২৪ এপ্রিল উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ২৮ মার্চ মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি এই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন গত বছরের ২ নভেম্বর প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা।
রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলেসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।
(দ্যরিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৭,২০১৯)