দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: টানা সাত ম্যাচ হার, চলতি বিশ্বকাপে সবচেয়ে হতাশা জন্ম দেয়া দল হচ্ছে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে তারা খেলতে এসেছে আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে। যদিও, তারা যখন বাছাই পর্ব খেলেছিল, ওই সময়টায় ছিল সহযোগি সদস্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের মত দলকে হারিয়ে বিশ্বকাপে নাম খেলায় আফগান ক্রিকেটাররা।

বিশ্বকাপের আগেও দারুণ সম্ভাবনা জানান দিয়েছিল দেশটি। প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল ৩ উইকেটের ব্যবধানে। একঝাঁক তরুণ এবং প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সমন্বয় আফগানিস্তানকে তৈরি করেছিল সত্যিকারার্থেই ব্ল্যাক হর্সে।

কিন্তু সেই দলটিই কি না বিশ্বকাপে এসে পুরোপুরি খেই হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে অধিনায়ক পরিবর্তন এবং একের পর এক খেলোয়াড় পরিবর্তনে দলের ভেতরে যে ব্যক্তিত্বের লড়াই, সেটা নির্লজ্জভাবেই বাইরে বেরিয়ে এসেছে। যে কারণে বিশ্বকাপে এতটা হতশ্রী অবস্থা আফগানদের।

বিশেষ করে আফগান ক্রিকেট দলের বিশ্বমানের তারকা রশিদ খান যারপরনাই হতাশ করেছেন। ৭ ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ৪ উইকেট। গড় ৭৮.৫। এর মধ্যে আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভারে দিয়েছেন ১১০ রান। কোনো উইকেট নেই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে বোলিং করেছেন তিনি।

সেই রশিদ খানের একটি জয় পাওনা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। বিশ্বকাপে কি তবে আজই সেই অঘটন ঘটাবে আফগানিস্তান? রশিদ খানের কণ্ঠে প্রত্যয়। তারা প্রস্তুতি ম্যাচে যে ঘটনা ঘটিয়েছিল, এবারও সেটার পূনরাবৃত্তি করতে চায়।

আগের সাত ম্যাচে চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যর্থ হলেও সাদা বলে এখনও বিশ্ব ক্রিকেটে খুবই আকর্ষণীয় এক ক্রিকেটার হচ্ছেন রশিদ খান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখনও মাঠে নামার আগে রশিদ খানকে নিয়ে আলাদা হোমওয়ার্ক করে আসতে হয় প্রতিটি দলকে। সেই রশিদ খানই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়ের জন্য চোখ রেখেছেন পাকিস্তানের ওপর।

পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে রশিদ খান জানিয়ে দিয়েছেন, কিছুটা চাপে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে মেই রোলটা প্লে করতে হয় আমাকেই। সে কারণেই কিছুটা চাপে আছি। তবে, ভিন্ন দিকও আছে। এ বিষয়টাই আমাকে দারুণ শক্তি এনে দেয়।’

হেডিংলিতে এই প্রথম খেলতে এসেছেন রশিদ খান। এখানকার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ তিনি। আশা করছেন, হেডিংলি হয়তো তাদেরকে ভালো কিছু স্মৃতি উপহার দেবে। তিনি বলেন, ‘এখানে এই প্রথম এলাম। ফ্যান্টাস্টিক স্টেডিয়াম। এমন পরিবেশে এই ম্যাচেই আমরা প্রথম জয় পেতে চাই। যদি তা করতে পারি, তাহলে হেডিংলিই আমাদের জন্য বাকী জীবনের সুখস্মৃতি তৈরি করে দেবে।’

এর আগে ব্রিস্টলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান। আফগান বোলারদের সামনে ৪৭.৫ ওভারে ২৬২ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল সরফরাজ আহমেদের দল। জবাবে ব্যটা করতে নেমে ২ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানরা। রশিদ খান ওই ম্যাচে ৯ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।

লিডসের হেডিংলিতে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের এই ম্যাচে কি হবে, সে দিকেই চোখ পুরো ক্রিকেট বিশ্বের। পাকিস্তান হেরে গেলে যে লাভ হবে তিন দেশের! বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড আর শ্রীলঙ্কার! নিঃসন্দেহে এই তিন দেশের ক্রিকেট ভক্তরা সবাই আজ আফগানিস্তানের সমর্থক হয়ে যাবে!

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৯,২০১৯)