মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: সিলেট ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেলপথে বরমচাল উপবন ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকে সব ট্রেনে যাত্রীসংখ্যা কমেছে। ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন ও ব্রিজের কারণে রেল ভ্রমণ অনিরাপদ বলে মনে করছেন যাত্রীরা। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রেন দুর্ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় পারাবত ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, তাদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্ক নিয়েই তাদের এ পথ দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

পারাবত ট্রেনের বগির অ্যাটেনডেন্স মো. মামুন আহমদ বলেন, ‘আগের মতো যাত্রী নেই। যাত্রীদের মধ্য আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনার পরদিন তো যাত্রী একেবারে কম ছিল। অনেকে টিকিট কেটেও যায়নি ‘

ট্রেন যাত্রী সুমন মিয়া জানান, ‘আতঙ্কে আছি। তারপরও ট্রেনে করে যেতে হচ্ছে।’

কুলাউড়ার বরমচাল বড়ছড়া ব্রিজের ওই দুর্ঘটনার পর থেকে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। নড়বড়ে ওই রেললাইনের কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। দীর্ঘদিন ধরে ত্রুটিপূর্ণ এই লাইনটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যাত্রী কমে যাওয়া নিয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. আফছার উদ্দীন বলেন, ‘প্রথমত যাত্রীদের মধ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্বিতীয়ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চালু হয়েছে। তারপরও ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আতঙ্ক দূর হতে একটু সময় লাগবে।’

তিনি যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। ট্রেন দুর্ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’

রেলযাত্রীদের অভিযোগ, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ১৭৯ কিলোমিটারের মধ্যে অধিকাংশই চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ওই পথের রেললাইন, ফিশপ্লেট, ক্লিপ, হুক, স্লিপার, নাট, বল্টু, সিগন্যালসহ সহযোগী যন্ত্রাংশগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া জরাজীর্ণ ইঞ্জিন ও বগিসহ ঝুঁকিপূর্ণ এবং মান্ধাতা আমলের স্টেশনসহ শিডিউল বিপর্যয় এ এলাকার প্রতি দিনের ঘটনা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এসব ব্রিজ, কালভার্ট, রেলপথ ও লাইন আর মেরামত হয়নি বলে ঝুঁকির বাড়ছে।

অপরদিকে, কুলাউড়ার বরমচাল বড়ছড়ায় দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় পড়ে থাকা বগি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী।

বরমচাল দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের কুতুব আলী ও ফরিদ মিয়াসহ গ্রামের অন্য বাসিন্দারা জানান, ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা বগি থেকে খুব দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৯,২০১৯)