দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ আগামী অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব বাস্তবায়নে জোর দিয়েছেন।

শনিবার প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রওশন বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যেক দেশেই আছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দিতে হবে।’

এর কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলে বিত্তশালীরা বিনিয়োগ করবেন। না হলে টাকা পাচার হয়ে যাবে। এসব টাকা বিনিয়োগ হলে, শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে আমাদের ছেলে-মেয়েদের কর্মসংস্থান বাড়বে।’

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থ নেই। বেসরকারি খাত ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছে না। অথচ বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন।’

কৃষকদের জন্য প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ধান বেশি হল, কিন্তু কৃষকরা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। কৃষক শস্য ফলাবে, তার প্রয়োজনীয় টাকা পাবে। কিন্তু তাদের মাথায় হাত। আগুন দিয়ে ধান পুড়িয়ে দিল।

‘তাদের প্রণোদনা দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যেও কৃষকদের শতভাগ ভর্তুকি দেওয়া হয়। কৃষককে কেন ধান ক্ষেতে আগুন দিতে হল। আমি কৃষিমন্ত্রীর কাছে এর জবাব চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষকরা অনেক দুস্থ। দিন আনে দিন খায়। তাদের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে হবে। দিনাজপুর পঞ্চগড়ের দিকে বেশি ধান হয়। সেখানে যদি এই অবস্থা হয়! গুদা- সাইলো গড়ে তুলতে হবে।’

অর্থবছর জুলাই থেকে না করে জানুয়ারি থেকে করার পরামর্শও দেন রওশন।

তিনি বলেন, ‘যখন অর্থবছর শুরু হয় তখন ভরা বর্ষা থাকে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’

তিনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়ার, অনলাইনে কেনাকাটায় কর প্রত্যাহার, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে সাংসদদের মতামত নেওয়ার আহ্বান জানান।

বাজেটের ইতিবাচক দিকের প্রশংসা করে রওশন বলেন, এর আগে কখনো সংসদ সদস্যরা এত আগ্রহ উৎসাহ নিয়ে বক্তব্য দেননি।

কর্মসংস্থান সৃষ্ঠি করা বড় চ্যালেঞ্জ আখ্যা দিয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, ‘বড় চ্যালেঞ্জ হলো বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। না হলে বৈষম্য কমবে না। এজন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে।’

বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদ অসুস্থ থাকায় তিনি বাজেট অধিবেশনে ছিলেন না। নিজের বক্তব্যে এরশাদের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তার স্ত্রী রওশন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান অনেক বেশি অসুস্থ। আস্তে আস্তে ভালোর দিকে যাচ্ছেন। তবে তিনি অনেক দুর্বল। আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার আরোগ্য লাভের জন্য দোয়া চাচ্ছি। সবাই দোয়া করবেন।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ২৯, ২০১৯)