দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: তিনি কি শুক্রবার খেলবেন? বৃহস্পতিবার লন্ডনে দুপুর গড়ানোর আগে থেকেই লর্ডসের বাতাসে ভেসে বেড়ালো এ গুঞ্জন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ গুঞ্জন ডালপালা মেললো। এক সময় মনে হলো মাশরাফি সত্যিই বুঝি খেলবেন না। কারণ ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন আর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও ঠিক বলতে পারছিলেন না, মাশরাফি আদৌ খেলবেন কি-না।

এটাকে গুঞ্জন বলা বোধ করি ঠিক হবে না। ভিতরের খবর, মাশরাফি নিজে থেকেই আজ পাকিস্তানের সাথে না খেলার কথা ভাবছিলেন। অবশেষে কাল (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে সে সিদ্ধান্ত পাল্টেছে। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট ‘মক্কা’ লর্ডসে লাল সবুজ জার্সি পড়ে মাঠে মাশরাফি। পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের সাথে টসও করলেন। মিরাজ, সাইফউদ্দীন আর মোস্তাফিজের পর প্যাভিলিয়ন প্রান্তে চার নম্বর বোলার হিসেবে করলেন বোলিংও।

কম বেশি সবাই সবাই জানেন, হ্যামস্ট্রিং ইনজুুরি নিয়েই বিশ্বকাপ খেলেছেন মাশরাফি। মাশরাফি তা লুকাননি। ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, অনানুষ্ঠানিক কথোপকথনে সব সময়ই জানিয়েছেন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কথা। তবে তার ধরণ সম্পর্কে সেভাবে কিছু বলেননি।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের আগে জানা গেল, মাশরাফির হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির সমস্যাটা একম ছোটখাটো নয়, ‘গ্রেড টু টিআর।’ চিকিৎসা একটাই- অন্তত সপ্তাহ তিনেকের পরিপূর্ণ বিশ্রাম।

কিন্তু মাশরাফি সেই ইনজুরি নিয়ে খেলে গেছেন। যে কারণে বলের ধার গেছে কমে। আর সেই সুযোগে সমালোচকরাও বসেছেন নড়েচড়ে। কেউ কেউ কিছু তির্যক কথা বার্তাও বলছেন।

মাশরাফি ওই ইনজুরির কারণে যে পূর্ণ শক্তি, উদ্যম আর শতভাগ উজার করে বল করতে পারছেন না, এটা না জেনে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যও ছুড়েছেন কেউ কেউ। যা হোক, সে বিচ্ছিন্ন উড়ো মন্তব্যগুলো মাশরাফির কানে গিয়ে থাকবে। তাই শেষ ম্যাচের আগে হঠাৎই না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। সেটা কোন গুঞ্জন-গুজব নয়।

মাশরাফি আজ (শুক্রবার) পাকিস্তানের সাথে ম্যাচে বিশ্রামে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন। টাইগার ক্যাপ্টেনের ভাবনা ছিল, যেহেতু ইনজুরি ভোগাচ্ছে আর পাকিস্তানের সাথে শেষ ম্যাচ এখন তেমন গুরুত্ববহ নয়। তাই বিশ্রামে থাকাই শ্রেয়।

এদিকে মাশরাফি খেলতে না চাওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় টিম ম্যানেজমেন্ট। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন আর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু কাল রাতে নিশ্চিত করে বলতে পারেননি, মাশরাফি খেলবেই।

ইনজুরি নিয়ে পুরো বিশ্বকাপ খেলা মাশরাফি শেষ ম্যাচে এসে ইনজুুরির কারণ দেখিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন, এমন খবরে বিব্রত হয়ে যান বোর্ড শীর্ষকর্তারা।

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ব্যক্তিগতভাবে মাশরাফির সাথে কাল বেশি রাতে (লন্ডন সময় ১১ টা নাগাদ, বাংলাদেশে তখন আজ ভোর ছয়টা) কথা বলতে বাংলাদেশের টিম হোটেল রয়েল ল্যাঙ্কাষ্টারে যান। ওই সময় বিসিবির অন্যতম শীর্ষ কর্তা মাহবুব আনাম, পরিচালক আকরাম খান, নাইমুর রহমান দুর্জয়, সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন, ইসমাইল হায়দার মল্লিক ও লোকমান হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ শীর্ষ কর্তারাও বোর্ড প্রধানের সাথে ছিলেন।

তারা মাশরাফিকে বোঝান এবং বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচটি মাঠ থেকে খেলে বিদায়ের অনুরোধ করেন। জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন এবং মাহবুব আনাম , আকরাম খান ও নাইমুর রহমান দুর্জয়সহ শীর্ষ কর্তাদের অনুরোধেই মাশরাফি মতো পাল্টান এবং লাল সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নামেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ০৫,২০১৯)