নড়াইল প্রতিনিধি: টি-শার্টের দাম নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে প্রথমে দোকানে মারধর করা হয় নাছির উদ্দিন (২৫) নামের এক কলেজছাত্রকে। এতেও ক্ষোভ না কমায় হাসপাতালে ঢুকে শয্যাশায়ী ওই ছাত্রকে আরেক দফা মারধর করা হয়। এসময় হামলাকারীদের ঠেকাতে গিয়ে আহত হন এক নার্সসহ আরও চারজন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকালে নড়াইল লোহাগড়া বাজারের মোল্যা মার্কেটে তালহা ফ্যাশন নামের এক দোকানে মারধর করা হয় নাছির উদ্দিনকে। এদিন রাতেই আবার নড়াইল সদর হাসপাতালে ঢুকে তাকে মারধর করা হয়।

আহতের পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র জানায়, প্রথমে মোল্যা মার্কেটে নাছির উদ্দিনকে বেদড়ক মারধর করেন তালহা ফ্যাশন-এর মালিক শামীম ও কর্মচারী বিপ্লবসহ ৩-৪ জন। পরে হাসপাতালে হামলা করেন শামীমসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬ জন।

আহত কলেজছাত্র নাছির উদ্দিন লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের শালবরাত গ্রামের শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। তিনি লোহাগড়া সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

আহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে তালহা ফ্যাশনে টি-শার্ট কিনতে যান নাছির উদ্দিন। এসময় দুইটি টি-শার্টের দাম চারশ’ টাকা দাবি করেন দোকানদার শামীম। নাছির তিনশ’ টাকা দিতে চাইলে ক্ষেপে যান দোকানদার। এর জেরে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে নাছিরকে স্টিলের লাঠি দিয়ে আঘাত করেন শামীম। এসময় নাছির দৌড়ে অন্য দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে তার ওপর হামলা করেন শামীম ও তার কর্মচারী বিপ্লবসহ ৩-৪ জন। বেদড়ক মারধরে নাছিরের ডান পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকাল ৫টার দিকে নড়াইল সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে শামীমসহ অজ্ঞাত ১৫ জন এ হাসপাতালে ঢুকে নাছিরকে মারধর শুরু করেন। এসময় হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে চারজন আহত হন। এর মধ্যে একজন হাসপাতালের নার্স ও বাকি তিনজন নাছিরের স্বজন।

নাছিরের মা রেনা বেগম বলেন, ‘দোকানদার শামীমসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-১৬ জন বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে আমার ছেলেকে মারধর করে। তাদের ঠেকাতে গিয়ে আমিসহ আমার ছোট ভাই নাইম মিয়া, ছোট মেয়ে টেকলি এবং একজন নার্স আহত হন।’

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এএফএম মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিকাল ৫টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার করা রোগী নাছিরকে আমাদের এখানে ভর্তি করা হয়। রাতে দুর্বৃত্তরা হাসপাতালে ঢুকে বেডে গিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। নাছিরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে এমন ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

নড়াইল সদর থানার এসআই পিয়াস সাহা বলেন, ‘খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ০৫,২০১৯)