ক্যারির পর স্টোইনিসের উইকেট তুলে নিলেন আদিল রশিদ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বড় দলগুলোর চরিত্রই এমন। কঠিন বিপদের মুখে কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে যাবেই। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তেমনি দলের কঠিন বিপদের সময় ত্রাণকর্তা হিসেবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন স্টিভেন স্মিথ এবং অ্যালেক্স ক্যারে।
তাদের দু’জনের ব্যাটে ১০৩ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে ওঠার পর হঠাৎই ঝড় তোলেন আদিল রশিদ। তার মায়াবী ঘূর্ণিতে একই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
১৪ রানে যেখানে ৩ উইকেট নেই, সেখানে অস্ট্রেলিয়ার শেষটাই আজ দেখে ফেলেছিল সবাই। ম্যাচ শেষে পরিস্থিতি কি দাঁড়ায়, সেটা এখনই বলা না গেলেও, অস্ট্রেলিয়া যে এমনি এমনিই ম্যাচটা ছেড়ে দেবে না, তা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন স্মিথ-ক্যারে। দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে ১০৩ রানের জুটি। ১৪ রান থেকে দু’জন অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে যান ১১৭ রান পর্যন্ত।
কিন্তু ২৮তম ওভারে বোলিং করতে এসেই ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদের মায়াবী ঘূর্ণি ফাঁদে পড়ে পরিবর্তিত ফিল্ডার জেমস ভিন্সের হাতে ক্যাচ দেন উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া অ্যালেক্স ক্যারে। ৭০ বল খেলে ৪৬ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর একই ওভারের শেষ বলে আদিল রশিদের বলটা ঠিকমত বুঝতে পারেননি মার্কাস স্টইনিজ। তার বল পায়ে লাগার পরই জোরালো আবেদন করেন আদিল রশিদ। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা অনেক্ষণ সময় নিয়ে এরপর ধীরে ধীরে আঙ্গুল তোলেন। তার আউট দেয়ার স্টাইল দেখেই মনে হচ্ছিল যেন, ইচ্ছার বিরুদ্ধে আউটটা দিয়েছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার দুর্ভাগ্য, রিভিউ বাকি ছিল না, তাই রিভিউর আবেদনও করতে পারেনি তারা। ১১৮ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট।
এ রিপোর্ট লেখার সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ৩০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩০। ৭৭ বলে ৫৯ রান নিয়ে ব্যাট করছেন স্টিভেন স্মিথ এবং ৭ বলে ৩ রান নিয়ে ব্যাট করছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর অস্ট্রেলিয়ার যে অবস্থা হয়েছিল, তাতে মনে হচ্ছিল বুঝি এজবাস্টনে যেন ফিরে এলো ওল্ড ট্র্যাফোর্ড। পুরোপুরি ভারতের মতই অবস্থা দাঁড়িয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইংলিশ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ১০ রানেই ২টি এবং ১৪ রানে হারিয়ে বসে ৩টি উইকেট।
বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারোন ফিঞ্চ। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইংলিশ পেসারদের তোপের মুখে পড়েন তারা। প্রথম ওভার কোনোভাবে কাটিয়ে দিতে পারলেও দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই জোফরা আরচারকে ঠিক মত খেলতে পারেননি ফিঞ্চ।
এলবিডব্লিউর আবেদন উঠতেই আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি ফিঞ্চের। তিনি রিভিউ চাইলেন। দেখা গেলো সত্যি সত্যিই এলবিডব্লিউ ছিলেন তিনি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকলো। কোনো রান না করেই ফিরে গেলেন ফিঞ্চ।
পরের ওভারেই ফিরে গেলেন চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ১১ বলে ৯ রান করেন তিনি। কিন্তু ক্রিস ওকসের দুর্দান্ত এক বাউন্সারে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে প্রথম স্লিপে বেয়ারেস্টর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১০ রানেই পড়লো ৩ উইকেট।
এরপর আরও একটি উইকেট পড়তে পারতো। জোফরা আরচারের বলে স্মিথ পরাস্ত হলে আউটের আবেদন করে ইংল্যান্ড। কিন্তু আম্পায়ার তাতে আউট না দিলেও রিভিউ নেয় ইংলিশরা। কিন্তু আম্পায়ার্স কলই রেখে দেন টিভি আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি।
স্মিথ আর হ্যান্ডসকম্ব মিলে চেষ্টা করেন একটা জুটি গড়ে বিপর্যয়কে সামাল দেয়ার। কিন্তু মাত্র ৪ রানের জুটি হলো। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই ক্রিস ওকসের আঘাত। এবার তাকে খেলতে গিয়ে ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগিয়ে বল ভেতরে টেনে আনেন হ্যান্ডসকম্ব এবং বোল্ড হয়ে যান। ১২ বলে ৪ রান করে আউট হলেন তিনি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ১১,২০১৯)