ফাইনালে ইংল্যান্ড
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ক্রিকেট ইতিহাসে তেমন 'কিছু' ইংল্যান্ডের পক্ষে নেয়। ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড, বলার মতো এই টুকুই যেন আছে তাদের। ইতিহাসের প্রথম টেস্টে-প্রথম ওয়ানডেতে হার। আগে তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বপ্ন ভঙ্গ। ঘরের মাঠে আগের চার বিশ্বকাপেও খালি হাত। দুই দশক আগে স্বাগতিক হয়ে গ্রুপ পর্বে বিদায়! সেই চোখ রাঙানি কাটিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ইংল্যান্ড।
ওদিকে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এজবাস্টন জয় করে লর্ডসে শিরোপা উচিয়ে ধরে অজিরা। সেসব পেছনে ফেলে এজবাস্টনেই অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। কিউইদের সঙ্গে নিশ্চিত করেছে লর্ডস যাত্রা। এবার ফাইনাল জিতে ইতিহাসকে বুড়ো আঙুল দেখানোর পালা পোমসদের। আর ক্রিকেট বিশ্ব নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখার অপেক্ষায়।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড মুখোমুখি মানেই টিভি পর্দা কিংবা গ্যালারিতে চোখ সেটে রাখার মতো ব্যাপার। সেই লড়াইয়ে ঐতিহ্য ধরে রেখে টস জিতে ব্যাটিং নেয় অস্ট্রেলিয়া। এজবাস্টনের উইকেটও ছিল ব্যাটিং সহায়ক। কিন্তু অলটাইম ফেবারিট অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত পেস বোলিং দিয়ে চিড়ে চ্যাপ্টা করে রাখে ইংল্যান্ড। শুরু থেকে শেষ অবধি অজি ব্যাটসম্যানদের ছড়ি ঘুরাতে দেয়নি পোমসরা। তবে স্টিভ স্মিথ নামে একজন ছিলেন। তার বিচক্ষণ ব্যাটিংয়ে ২২৩ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।
জবাব দিতে নেমে বোলারদের চেয়েও বেশি নির্দয় হয়ে ওঠেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। অজি পেসারদের পাত্তাই দেয়নি তারা। দেয়নি কোন সম্মান। দুই ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো ঝড়ো শুরু করেন। দু'জন গড়েন ১২৪ রানের জুটি। ১৮ ওভারের মধ্যে গড়া ওই জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। জনি বেয়ারস্টো ৩৪ রান করে ফেরেন। জেসন রয় ৬৫ বলে ৮৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। পাঁচটি ছক্কা এবং নয়টি চার মারেন তিনি। তবুও সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের একমাত্র আক্ষেপ রয়। সেঞ্চুরির পথে থাকা ইংলিশ ওপেনার আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে ফিরে যান।
রয়-বেয়ারস্টো ২৩ রানের ব্যবধানে আউট হন। কিন্তু জো রুট কিংবা ইয়ন মরগানের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল না। তারা অজিদের দুমড়ে-মুচড়ে দিতে প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত ৩২.১ ওভারে রুট-মরাগানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে থাকা রুট ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন। মরগান খেলেন ৩৯ বলে ৪৫ রানের হার না মানা ইনিংস। বিশ্বকাপ ইতিহাসে ১০৭ বল হাতে রেখে জয়ের রেকর্ড গড়ে তারা। এরআগে ১৯৭৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ১৮৮ বল হাতে রেখে হারায় অস্ট্রেলিয়া। একই বিশ্বকাপে ১১৯ বল হাতে রেখে কিউইদের হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এছাড়া ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১১ বল হাতে রেখে হারায় অস্ট্রেলিয়া।
এছাড়া ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের এক আসরে ভারত, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর রেকর্ড গড়ল। আর অস্ট্রেলিয়া ২০০২ সালের পর এজবাস্টনে হারের স্বাদ পেল। এরআগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এক বছর নিষিদ্ধ থাকা স্টিভ স্মিথ খেলেন ৮৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। এছাড়া অ্যালেক্স কেরি ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন। দু'জনে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। মিশেল স্টার্ক ২৯ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২২ রান করেন। ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ তিনটি করে উইকেট নিয়ে গুড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। দুটি উইকেট নেন জোফরা আর্চার। অস্ট্রেলিয়ার উইকেট দুটি নেন স্টার্ক ও কামিন্স।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ১২,২০১৯)