নয়ন বন্ড-মিন্নির ফোনালাপের বিস্তারিত আদালতে
বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির কথোপকথনের বিস্তারিত আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। এরপর মিন্নিকে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
মঙ্গলবার সকালে মিন্নিকে তার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনে ডেকে আনা হয়। ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১নং সাক্ষী। হত্যার দিন স্বামীর সঙ্গে তিনি কলেজে গিয়েছিলেন। কলেজ থেকে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের রামদার কোপে রিফাত শরীফ নিহত হয়।
বুধবার বিকেল সোয়া ৩টর দিকে মিন্নিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের শুনানির জন্য আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও আসামির পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়নি। বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী আসামি মিন্নিকে এ ব্যাপারে কিছু বলার আছে কি না জানতে চাইলে মিন্নি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘‘আমি আমার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যার বিচার চাই।’’
এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার পরিদর্শক হুমায়ুন কবির আদালতে মামলার ১২নং আসামির জবানবন্দি পেশ করেন। এতে আসামি টিকটক হৃদয় হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত মর্মে জবানবন্দি দিয়েছে।
এ ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের আগে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে মিন্নির কথোপকথনের বিস্তারিত পেশ করেন। এরপর এ সব ব্যাপারে আদালত জানতে চাইলে মিন্নি তখন নীরব থাকেন। পরে বিচারক তাকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সনজিব দাস উপস্থিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান। সনজিব দাস জানান, এ ঘটনায় আইনজীবীদের কেউ আসামিদের পক্ষে নিয়োগ না হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে মিন্নির পক্ষে আদালতে আইনজীবী ছিলেন না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, আদালতের কাছে আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৬ জুন রিফাত শরীফকে বরগুনা সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরের দিন নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এ মামলায় এর আগে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীসহ চারজন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ১
,২০১৯)