দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অনলাইনে ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে অর্ডার দিয়ে বাসায় এনে তাদের আটকে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে মুক্তিপণ দাবি করত একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র। একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারসহ ওই অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-৩।

শনিবার রাতে রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকা থেকে ভুক্তভোগী উদ্ধারসহ তিনজনকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা ভুক্তভোগীর নাম মো. জাকির হোসেন সোহাগ। আটকেরা হলেন নাছরিন আক্তার, মো. তাইজুল ইসলাম, মো. ফয়সাল। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি ওয়াটার পিউরিফায়ার, একটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান বলেন, চক্রটি মূলত অনলাইনে ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে অর্ডার দিয়ে বাসায় এনে তাদের আটকে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে মুক্তিপণ দাবি করতো। তারা দীর্ঘদিন ধরে এধরনের কাজ করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, জাকির হোসেন সোহাগ ওয়াটার পিউরিফায়ার থ্রি-এম ব্রান্ড কোম্পানির ম্যানেজার। ওয়াটার পিউরিফায়ার থ্রি-এম ব্রান্ড কোম্পানির মালামাল হোম ডেলিভারি সুবিধা থাকায় আটক হওয়া নাছরিন অনলাইন হতে নম্বর সংগ্রহ করে জাকিরকে ফোন দিয়ে একটি ওয়াটার পিউরিফায়ারের অর্ডার দেয় এবং হোম ডেলিভারি দেওয়ার কথা বলে।

সে অনুযায়ী জাকির গতকাল শনিবার দুপুরে নাছরিনের কদমতলীর বাসায় একটি ওয়াটার পিউরিফায়ার নিয়ে গেলে তাকে আটকে রাখা হয়। আটকে রাখার পর ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয় এবং আটক তাইজুল ও ফয়সাল ভুক্তভোগী জাকিরকে মারধর করে। এসময় নাছরিন ভুক্তভোগী জাকিরের সঙ্গে অশ্লীল ছবি তোলে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দেয় হয় তাহলে ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী বাসায় ফোন করে অপহরণকারীদের দেয়া মোবাইল নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলে। পরে ভুক্তভোগীর ভাই দেলোয়ার অপহরণকারীদের মোবাইল নাম্বারে বিশ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠায়।

এমরানুল হাসান বলেন, ভুক্তভোগী জাকিরের ভাই দেলোয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং জুরাইনের কদমতলী, মুরাদপুরের একটি বাসার ৪ তলা থেকে ভুক্তভোগী জাকিরকে উদ্ধারসহ তিনজন অপহরণকারীকে আটক করে।

আটক তিন আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা নিজেরা সহজ সরল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন কৌশলে পণ্য কেনার কথা বলে বাসায় এনে আটক রাখে এবং মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।

আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ২১,২০১৯)