আন্দোলন ঠেকাতে ঢাবিতে ছাত্রলীগের পাহারা
ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ঠেকাতে সকাল থেকে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনগুলোতে অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের পাহারায় ক্লাস পরীক্ষা শুরু হলেও দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা কয়েকটি ভবনে ফের তালা দেন। যদিও ওসব তালা কর্মচারীরা ভেঙে ফেলেন।
এদিকে আন্দোলনে অংশ নেয়ায় এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের সামনে ছাত্রলীগের কর্মীদের হামলায় ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিদ চোখে আঘাত লাগে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
এসএম হলের ছাত্রলীগ কর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাবিল হায়দারের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে সকালে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, মোতাহার হোসেন ভবনের সামনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা গ্রুপে গ্রুপে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এই সময় আন্দোলনকারীদের কাউকে দেখা যায়নি। এরপর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আন্দোলনকারীরা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে আসছে। সেই ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কোনোরকম আস্থা রাখতে পারছে না। আমাদের এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেয়।’
‘আমাদের দাবি হচ্ছে একটাই- সেটা হচ্ছে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করতে হবে। আর সেই অধিভুক্তি বাতিল না করা পর্যন্ত আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন এবং যে অসহযোগ কর্মসূচি চলছে তা চলমান থাকবে এবং আমাদের দাবি যদি না মানা হয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু করা হয় সেটা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার সমুচিত জবাব দেবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষায় কোন বাধা দেয়া হচ্ছে না। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছে স্বতস্ফূর্তভাবে। তালাটা লাগাচ্ছি আমরা প্রতিকী হিসেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন আপু এবং একজন ভাই আমাদের আন্দোলনে অংশগ্রহনের জন্য আসছিলেন, সেখানে ছাত্রলীগের কিছু কর্মী তাদের আটকায় এবং তাদের আন্দোলনের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২
,২০১৯)