লেখিকাকে ধর্ষণ : জাপার লোটনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিয়ের কথা বলে এক লেখিকাকে একাধিকবার বিউটি বোর্ডিংয়ে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটনের (৫৩) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
ঢাকার এক নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু নাসের মো. জাহাঙ্গীর আলম এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার তৌয়ব আলী আজ সোমবার (২৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল রোববার ট্রাইব্যুনালে লোটনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন ঢাকার মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা। এরপর বাদীপক্ষের আইনজীবী লোটনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। বিচারক প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে লোটনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গত ১১ জুলাই লেখিকা পরিচয় দিয়ে এক নারী আলমগীর সিকদার লোটনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি পিটিশন মামলা (৮৪/১৯) করেন। আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, ‘সিকদার অ্যান্ড পাবলিকেশন’ ও ‘আকাশ পাবলিকেশন’র মালিক আসামি আলমগীর সিকদার লোটন। তিনি একজন লেখিকা হওয়ার সুবাদে আসামির সঙ্গে পরিচয়। তিনি ‘সংগঠক ও সংগঠন’ রাজনৈতিক বইটি লিখতে আসামি লোটনের সঙ্গে সহকারী লেখিকা হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে আসামির প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ পাবলিকেশন’ থেকে প্রকাশিত ‘সময়ের আয়নায় পল্লীবন্ধু’ ছবি অ্যালবামের নির্দেশনা ও অঙ্গসজ্জা হিসেবেও কাজ করেন। সেই সময় এসব কাজের জন্য তিনি আসামির সঙ্গে দেখা করতেন। তখন আসামি তাকে পেলেই বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলতেন। আসামি বাবার বয়সী ভেবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন। এ ছাড়া আসামি বিভিন্ন সময় ফোনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে তার কাছে নোংরা ছবি পাঠাতেন এবং ভিডিও কলে নোংরা প্রস্তাব দিতেন। তবে তিনি কঠোরভাবে প্রতিবাদ করতে পারতেন না, কারণ তাকে কাজের জন্য আসামির কাছে যেতে হতো।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আসামি লোটনের জন্মদিন হওয়ায় তার অনুরোধে বাদী রাজধানীর কোতোয়ালি থানার বিউটি বোর্ডিংয়ে আসেন। সেখানে জন্মদিনের কেক কাটার পর আসামি তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে গাড়িতে তোলেন। পথে ড্রাইভার ও তার সহযোগীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে রাজধানীর মোহাম্মাদপুর এলাকার একটি নিরিবিলি স্থানে গাড়ি থামিয়ে রাত ৯টার দিকে গাড়িতেই বাদীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন এবং সে সময় মোবাইল ফোনে কিছু নোংরা ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর বাসায় পৌঁছে দেয়ার সময় হুমকি দেন, বিষয়টি কাউকে জানালে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেবেন। আসামির কাছে নোংরা ছবি ও ভিডিও থাকায় তিনি বাদীকে ব্ল্যাকমেইল করে বিভিন্ন সময় আসামির পাবলিকেশন ও বিউটি বোর্ডিংয়ে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
সর্বশেষ গত ৩০ জুন আসামি বাদীকে বিয়ে করবে বলে ডেকে এনে বিউটি বোর্ডিংয়ের দোতলার একটি কক্ষে ধর্ষণ করেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২৯,২০১৯)