এবার গুড়ো দুধের দিকে নজর হাইকোর্টের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ১৩ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের উৎপাদন-বিক্রয় বন্ধের আদেশের পর এবার গুড়ো দুধের দিকে নজর দিয়েছেন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ।
আদালত বলেছেন, আমরা শুধুই তরল দুধ নিয়ে ব্যস্ত আছি। গুড়ো দুধে কি আছে তা দেখা দরকার। আমরা চাই না, দেশীয় দুধ বন্ধ হওয়ার কারণে বিদেশি গুড়ো দুধে বাজার সয়লাব হয়ে যাক। বিদেশি গুড়ো দুধ বাংলাদেশের বাজার দখল করুক এটা আমাদের কাম্য নয়।
সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য ও গো খাদ্য নিয়ে আদালতের জারি করা স্ব-প্রণোদিত রুলের ওপর শুনানিকালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দেয়া প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
আদালত বলেন, দেশীয় খামারীদের দুধ বন্ধ হোক, এটা চাই না। আমাদের চাওয়া, দেশীয় খামারীদের দুধের উৎপাদনের বিস্তার আরো বাড়ুক। তবে সেটা হতে হবে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে। কোনোভাবেই তা জনস্বাস্থ্যের জন্য অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ না হয়। আমাদের চাওয়া, দেশে মানুষ যেন ভাল থাকে।
এ সময় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফরিদুল ইসলাম বলেন, গুড়ো দুধ পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারেন আদালত।
আদালত বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব আপনাদের ও বিএসটিআইয়ের। আদালতের কেন আদেশ দিতে হবে? আইনে আপনাদেরইতো ক্ষমতা দেয়া আছে। আপনারা কেন সেটা পরীক্ষা করছেন না?
জবাবে এ আইনজীবী বলেন, আমরা পরীক্ষা করতে গেলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ীরাই প্রশ্ন তুলবে যে কেন আমরা তা পরীক্ষা করছি। আদালত আদেশ দিলে সেই প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না।
এরপর বিএসটিআইয়ের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান বলেন, দুধে যে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে তার অধিকাংশই সহনীয় মাত্রায়। আর সীসা পাওয়া গেছে সহনীয় মাত্রার চেয়ে সামান্য কিছু উপরে। তাই এই দুধ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা পরীক্ষা করে মতামত জানতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, বিদেশে প্রতি বছর ২/৩ বার দুধ পরীক্ষা করা হয়। এটা দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি আছে। আমাদের দেশেও এরকম একটি কমিটি করার জন্য আদালতের আদেশ চাচ্ছি।
পরে আদালত আগামী ২০ অক্টোবর আদেশের জন্য দিন ধার্য করে বলেন, হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধে নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কি অবস্থা দাঁড়ায় তা দেখা দরকার। এরপর আমরা আদেশ দেবো।
এর আগে গতকাল ২৮ জুলাই হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান সিসা, অ্যান্টিবায়োটিক থাকায় বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী ১৪টি কোম্পানির সব পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সংগ্রহ ও বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।
আজ অবশ্য শুধু মিল্কভিটার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২৯,২০১৯)