টিপু সুলতান'র চারটি কবিতা
আমার শহরের যৌবন
আমার শহরের যৌবন বুড়ো হয়ে যাচ্ছে।
পিচঢালা রাস্তা,ধূলো ধূসরে ডিমপোজের মতো
চতুর্পাশে শিল্পকার গর্ত,বেহায়া নির্যাতনে আবাসিক রঙ-
রড-কংক্রিটের হাড় গাঁথা মন্দিরশোভিত প্রাসাদ
পুরাতন সিককাটা দ্বিতল জানালায়-আমার পবিত্র নাক
বাঁকান্তর এগুচ্ছে,অহেতুক লুটিয়ে পড়ছে আহত ভাষা
নিজের ভেতর লবণ মাখা বক্তব্য-একটি গোলাপগাছ
যদি সুগন্ধী ফুল ফোটাত,জেগে থাকতাম।ঘুমতাম না।
ঘাসগুলো তাঁর উঠানে ফড়িং ছড়ায়
চারদিক পৃথিবী।এখানে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে
ধারাপাঠ পড়তে পড়তে বর্ণনা করি
বসন্ত ঠোঁটে অনিন্দ্যসুন্দরের গান-
মোটা বয়সে এই দূরাগত উচ্চাঙ্গসংগীত
আমার কানের নেতি ঝুলে
সমস্ত পাহাড়ের গোপনীয়তা শোনায়-
নীলগিরি দেবতার পায়চারি,দলবেঁধে ফেরা গুড়ো বাতাস
ব্লাডভর্তি ঘন উদ্ভিদ,প্রীতিধানের কণ্ঠস্বর,প্রকৃত পামূল;
ইথারনেটে ঝর্ণাধারা,অদূরে আকাশ
পাহাড় কাটা জ্যোৎস্না চূড়োয় গড়িয়ে যায়
নৈঃশব্দ্যের রোপণ করা শরীর-
চাকমা মেয়ের গোপন ভ্রমণ...
এই প্রণয় শিল্প,বাঙালীর সমতলে
অরণ্যবিথীর জরায়ু ঋতুর গহীনে চাকমা গান
ঘাসগুলো তাঁর উঠানে ফড়িং ছড়ায়!
গণসমুদ্রচোখ আমাকে পাহারা দেয়
দাগহীন আত্মসমর্পণ,গোটা থানকুনি বাঁক তা দিচ্ছে।
ধূলোর গায়ে-বেদনায়,প্রয়াণে;
দলগুচ্ছ মানুষের কবিতা-
হাতের পাশে মাঠ,ছায়ার পরিভ্রমণ
ছেঁড়া ছেঁড়া গদাঘাত মেঘ
ধূসরপথে শতছিন্ন জময বর্ষার পরাগরেণু,
বিনয়ী রোদ-ঋতুবনে,ভূতভয়,
কবরস্থান উপেক্ষা সকল কবিতার জোড় পা স্কুলে যায়-
ঠাণ্ডা বাতাস,অখণ্ড অবসর,জলপাই রঙের উদ্ভিদ উঠান
কিচিরমিচির ব্যস্ত-চিউমিউ শোরগোল
হাসির টুকরো লেপটানো কমলা লেবু রঙ ধানেধানে,
গণ সমুদ্রচোখ-অগণিত নাবিক পালে
আমাকেও পাহারা দেয়,এ গণভোট মুক্ত বিস্ময়ের!
বিষণ্ণতার মিউজিয়াম
খোলা জানালা গলে ব্যথার বিম্বিত ধ্বনি ছুটে আসছে।
কানের কাছে,গহিন ক্রোধনে জমা শব্দের তলপেট-
পায়ের কাছে মাটি,নিজের কোলে শোয়ানো কবর
নীল বর্ণ গেদরভেদর রোদ-আপেল রঙ পোড়ায়
পালিয়ে যাচ্ছে-নিবিড় সম্পর্ক,ঘাসের ওপর-আতঙ্ক অধ্যায়
নারী ও ভোরপাখি আটকানো বিষণ্ণতার মিউজিয়াম;
দু হাতে ছাউনি বানানো,গোলপাতা ছায়া ছানার মতো-
মঙ্গলম প্রার্থনা।চোখে শঙ্কাহরা জল ঝাঁপিয়ে পড়ে
অজস্র বাণীগুলো ওড়ে,ভয়ার্ত ঘামে-মানুষ সংসার!
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ০২,২০১৯)