দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ব্যাংকিং খাতে ঋণ ও আমানতের সুদ হার ‘নয়-ছয়’ শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এ বিষয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে দেশের বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সাথে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সব ব্যাংকের মালিকের সুদ হার এক অংকে নিয়ে আসবেন বলে কথা দিয়েছেন। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করবে ব্যাংকগুলো।

ঋণ খেলাপির বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ফেরত না দেয়ার উদ্দেশে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের আর কোনো ছাড় দেয়া হবে না। ওই টাকা তারা ব্যবহার করতে পারবে না। খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার করতেই হবে। খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ অর্থনীতির ৮০ থেকে ৮২ ভাগ এলাকা জুড়ে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাত। অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতের অবদান কম নয়।

ফার্মাস ব্যাংকের আর্থিক দূরাবস্থার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার পর সরকার চুপ থাকেনি। ব্যাংকটিকে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য সব ব্যবস্থা করেছে।

‘‘একইভাবে বেসিক ব্যাংক একটি প্রবলেম ব্যাংক। এটা স্বীকার করতে হবে। তবে ব্যাংকটি যাতে টিকে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ব্যাংকটিকে আরো সুযোগ দেয়া হবে। কারণ জনগণ আর উদ্যোক্তাদের টাকায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। অতএব ব্যাংকিং খাতকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘৬ মাস আগেও ব্যাংকিং খাতে ‘লুটপাট’ হচ্ছে- এমন শব্দ গণমাধ্যমে আসতো। এখন আর এই শব্দ ব্যবহার করা যায় না। কারণ এ খাতের অনেক উন্নতি হয়েছে। চলতি বছরের জুন নাগাদ ব্যাংকিং খাতের চিত্র দেখা যাবে সেপ্টেম্বরের দিকে। তখন অবশ্যই ভাল অবস্থান দেখা যাবে। আশাকরি ওই সময় খেলাপি ঋণও কমে আসবে।’

ঋণের সুদ হার বিষয়ে ব্যাংক মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সুদ হার ১৪, ১৫, ১৬ শতাংশ হিসেব করে কী লাভ। যদি সেই ঋণ পুনরুদ্ধার করা না যায়। ১০/২০ বছর ধরে টাকা আটকে রয়েছে। ফেরত আসছে না। দেখা যায় কয়েক বছর পর পর ওই ঋণ অবলোপন করতে হয়। তাই এত বেশি সুদ হার হিসেব করে লাভ নাই। অতএব সুদ হারে ছাড় দিতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকে ঋণের সুদ হারে চক্রবৃদ্ধি সুদ নেয়া যাবে না। সরল সুদ হার হিসেবে আদায় করতে হবে।

সরকারের দেয়া নির্দেশ পালনে ব্যাংকগুলো কতটা মনোযোগী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছে ব্যবসা করার জন্য। আবার সরকার সেগুলো বন্ধও করতে পারে। অতএব ব্যাংকগুলোকে নিয়ম মেনেই কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

সঞ্চয়পত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্র মূলত যাদের জন্য গঠন করা হয়েছে তারা যেন এর সুফল পান সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বড় লোকদের জন্য সঞ্চয়পত্র করা হয়নি।


(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ০৪,২০১৯)