ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: বখাটের সঙ্গে ঠিক হওয়া বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চিঠি লিখেছে এক স্কুলছাত্রী। ওই ছাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বইগর গ্রামের মৃত নুরুল আমীনের মেয়ে।

সরাইল উপজেলার বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মোমিনা আক্তার মঙ্গলবার নিজেই সরাইলের ইউএনওর কার্যালয়ে গিয়ে চিঠি দিয়ে আসে। এর আগে গত সোমবার একই চিঠি আশুগঞ্জের ইউএনওকেও দিয়েছে মোমিনা। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

চিঠিতে মোমিনা জানায়, সে বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার রোল নম্বর দুই। চার বছর আগে তার বাবা গ্রামের দুষ্কৃতকারীদের হাতে খুন হন। সেই থেকে তার পরিবারের লোকজন অত্যন্ত অসহায়। বইগর গ্রামের শেখ সাদি ভূঁইয়ার বখাটে ছেলে উছমান ভূঁইয়া প্রায়ই মোমিনাকে উত্ত্যক্ত করে। এ নিয়ে উছমানের পরিবারের কাছে বিচার চাওয়ায় ওই বখাটে জোরপূর্বক মোমিনাকে বিয়ে করার ঘোষণা দেয়।

কয়েকদিন আগে ওই বখাটের পক্ষে গ্রামের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, সজিব ভূঁইয়া, আকবর ভূঁইয়া, মলাই ভূঁইয়া ও শাহআলম ভূঁইয়া মোমিনার বাড়িতে গিয়ে তার মাকে চাপ সৃষ্টি করে উছমানের সঙ্গে মোমিনার বিয়ের কথা পাকা করেন।

চিঠিতে মোমিনা আরও উল্লেখ করে, তার মাকে বিয়ের জন্য হুমকি-ধামকি দিয়ে রাজি করানো হয়েছে। তার বড় বোন তানজিনা আক্তার এখনও অবিবাহিত। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই মোমিনা নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে সরাইল উপজেলার কাটানিশার গ্রামে বড় ভগ্নিপতি জাবেদ মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। গত ৩ আগস্ট বখাটে উছমান সেখান থেকে মোমিনাকে তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে।

মোমিনা সাংবাদিকদের জানায়, তার বিয়ের বয়স হয়নি। সে পড়ালেখা করতে চায়। এই বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সবার সহযোগিতা চায় সে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. মোসা বলেন, মোমিনাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে আশুগঞ্জ ইউএনওর সঙ্গে আমি কথা বলবো।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজিমুল হায়দার বলেন, মোমিনা আক্তারের চিঠির প্রেক্ষিতে ওই বখাটে ছেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি ডেকে পাঠিয়েছি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ০৭, ২০১৯)