এখনও ষড়যন্ত্র চলছে, বাতাসে চক্রান্তের গন্ধ: ওবায়দুল কাদের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। বাতাসে চক্রান্তের গন্ধ রয়েছে। অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যত ঐক্যবদ্ধ হবো, শেখ হাসিনার হাত ততই শক্তিশালী হবে।
তিনি শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে এসব কথা বলেন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট ৬৩টি জেলায় সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কয়েক মাস পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জোর করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনে জিততে চান না। আওয়ামী লীগ জনগণকে খুশি করে জনগণের রায় মেনে নির্বাচিত হতে চায়। জনপ্রতিনিধিরা যদি ভাবেন, ক্ষমতায় আছেন, জিতেই যাবেন, তাহলে ভুল হবে। জনগণের মন জয় করে ও তাদের ভোটেই নির্বাচিত হতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল কী ভুলে গেছেন, কারা সেদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে? ২১ আগষ্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারা ছিল এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড, ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে? হাওয়া ভবন থেকে কীভাবে নির্দেশনা এসেছিল? সেদিন এফবিআই'কে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দেওয়া হয়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল বিএনপি কর্মীদের জন্য কাঁদেন। কিন্তু তাদের সরকারের আমলে কাঁদতে কাঁদতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চোখের পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, এই বিএনপিই সেদিন হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজনীতিশূন্য করতে চেয়েছিল। ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলারও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল তারা। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের কথা ভুলে সন্তানহারা মাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বান্ত্বনা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কী ভাষায় কথা বলা হয়েছিল? এসবের জবাব দিতে পারবেন না মির্জা ফখরুল সাহেব? ভুলের রাজনীতি ও নেতিবাচক রাজনীতি এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তারা নিজেদের রাজনীতি নিজেরাই শূন্য করে দিয়েছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলরা নাকি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করতে পারছেন না। তারা কত দেউলিয়া হয়ে গেছেন যে, আন্দোলন করতে পারেননি। তাদের দেখলে মনে হয়, জয়নুল আবেদীনের ছবির কাঁদার মধ্যে আটকে যাওয়া গরুর গাড়ির মতো। এখান থেকে উদ্ধার পেতে হলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা এবং দুর্নীতির রাজনীতি পরিহার করতে হবে। নেতিবাচক ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করতে করতে তারা ভুলের চোরাবালিতে এসে নিজেদের শুন্য করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ তাদের শূন্য করতে চায়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খুন-হত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি বিএনপিই শুরু করেছিল। আজ কোন সাহসে সন্ত্রাসের রাজনীতির কথা বলে? বাংলাদেশের মানুষ কী ভুলে গেছে সেই হাওয়া ভবনের লুটপাট ও দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা? দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কথা বলঅ হচ্ছে। এ সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক বিএনপিই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর নেতা শেখ বজলুর রহমান, শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ১৭,২০১৯)