‘প্লটের জন্য সব এমপি আবেদন করেছেন, আমারটা কেন ভাইরাল’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানা বলেছেন, একাদশ সংসদের সব সংসদ সদস্য প্লটের জন্য আবেদন করেছেন, কিন্তু শুধু আমার চিঠিটা কেন ভাইরাল হলো?
তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্য রাষ্ট্র থেকে জায়গার জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন, সেই সুযোগ তার আছে। তিনি একটি ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি আনতে পারেন, সেই সুযোগ তার আছে। তিনি বেতনভাতা পান এবং তিনি পাঁচ বছরের জন্য একটা অ্যাপার্টমেন্ট পান- এই চারটি জিনিস হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সুযোগ।
‘এই রাষ্ট্রীয় সুযোগ যিনি সংসদ সদস্য হবেন, তিনিই রাষ্ট্র থেকে পাবেন। সেই সুবাদে আমি একটি আবেদনপত্র দিয়েছি। শুধু আমি একা নই, অন্তত ৩০০ থেকে ৩৫০ এমপি অ্যাপ্লিকেশন দিয়েছেন।’
প্লটের আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রুমিন ফারহানা।
তিনি বলেন, গত এক মাস আমার ফেসবুক হ্যাক হয়ে আছে। আমি বিষয়টি দেখিনি। তবে ফেসবুকে আমার যে চিঠিটা ভাইরাল হয়েছে, সেটি না অবৈধ না অনৈতিক। সুবিধাটা রাষ্ট্রীয় সুযোগ বা রাষ্ট্রীয় অধিকার।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই- আমি এই সরকারের কাছ থেকে এক সুতা জমিও আশা করি না, আমি চিন্তাও করি না। এটি একটি প্রসিডিউর, একটি ফরমালিটিজ, যেটি সব এমপি করেছেন, আমিও করেছি।
‘এই চিঠি আমি ড্রাফটও করিনি, আমার পিএস ড্রাফট করে দিয়েছে। সব পিএস যখন তাদের এমপিদের চিঠি ড্রাফট করেছে, আমার পিএসও ড্রাফট করে দিয়েছে। কিন্তু আমার চিঠিটা কেন ভাইরাল হলো? এটা ভাইরাল কেন হলো তার উত্তর আমি নিজেই দিচ্ছি।’
রুমিন ফারহানা বলেন, গত দুদিন আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত (সাবেক অর্থমন্ত্রী) কোনো পদে না থাকাবস্থায় শুল্কমুক্ত গাড়ি এনেছিলেন। সরকার তার সেই নোংরামি ও অসততাকে চাপা দিতে আমার যে বৈধ অ্যাপ্লিকেশন সেটি নোংরাভাবে পাবলিক করেছে। একটা সরকারি নথি কখন পাবলিক হয়, যখন সেখানে সরকারের মদদ থাকে।
‘আমরা প্রশ্ন হলো- আমার চিঠিটা মন্ত্রণালয় থেকে বেরোলো কী করে? যেখানে আমার ব্যক্তিগত টেলিফোন নম্বর দেয়া আছে?’
তিনি আরও বলেন, এই সরকার আমাদের ফোনে আড়ি পাতে, এই সরকার আমাদের ফেসবুক হ্যাক করে, এই সরকার আমাদের সব গোপন নথি ইচ্ছে করে প্রকাশ করে। যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, যারাই সরকারের কাজের সমালোচনা করবে, যারাই সরকারকে সঠিক পথে আনার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার সে বিষয়ে কথা বলবে এবং সরকারের মনমতো কথা না বলবে তাদের ব্যাপারে সরকারের এক ধরনের চেষ্টা থাকে তাদের হিউমিলেটেড করা বা তাদের কোনো না কোনোভাবে ম্যালাইন করা।
রুমিন ফারহানা বলেন, আমার প্রশ্ন হলো- আমার চিঠিটা কি অবৈধ? কোন আইনে অবৈধ? এটি কি অনৈতিক কোনো আইনে অনৈতিক? এটি তো রাষ্ট্রীয় চিঠি। আমি তো সরকারের কাছ থেকে কিছুই চাইনি। আমার বেতনটা যেমন রাষ্ট্রীয়, আমার এই অ্যাপ্লিকেশনও রাষ্ট্রীয়।
তিনি বলেন, এই সরকার যে অবৈধ এটা এখন বলছি, আগেও বলেছি- এটি সম্পূর্ণ অবৈধ সরকার। এটি জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচিত সরকার। এই সরকার সর্ব অর্থে অবৈধ সরকার। আমি সরকারের কাছে কোনো কিছু চাইনি। আমি রাষ্ট্রীয় সুযোগ চেয়েছি। এটি তারা (সরকার) করেছে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে যে অবৈধ ও অনৈতিক সুবিধা দিয়েছে, ওটাকে চাপা দেয়ার জন্য, জনদৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য। যাতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে যায়।
তিনি বলেন, আমি এখন চ্যালেঞ্জ করব- যতজন এমপি অ্যাপ্লিকেশন করেছেন সব প্রকাশ করা হোক। রুমিন কেন একলা?
রুমিন ফারহানা বিএনপির সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। একাদশ নির্বাচনে নারী সংরক্ষিত আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
গত ৩ আগস্ট পূর্বাচলে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ চেয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ২৬ ,২০১৯)