দ. এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা পাচ্ছে এ দেশের বিরোধী দল: কাদের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ভোগ করছে। বিরোধী নেতারা যখন যেখানে খুশি অবাধে যাচ্ছেন, বক্তব্য দিচ্ছেন। সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় কথাবার্তা বলছেন। এরপরও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ কতটা গ্রহণযোগ্য, তা বিচারের ভার দেশবাসীর হাতে ছেড়ে দেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত শোকসভায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যুব মহিলা লীগ এ সভার আয়োজন করে।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে বিরোধী দল যে নিরাপত্তাব্যবস্থা পাচ্ছে, আমার তো মনে হয় না দক্ষিণ এশিয়ায় এত ভালো নিরাপত্তা আর কোনো দেশের আছে।
বিএনপির আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করার জন্য কোনো প্রকার হুমকি সৃষ্টি করছে না সরকার। এখন কেউ যদি সভা-সমাবেশ ডেকে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখেন, তা হলে কার কী করার আছে। মির্জা ফখরুল ইসলামরা নিজেরাই নিজেদের গুটিয়ে ফেলেছেন। আন্দোলন করার সৎসাহস তাদের নেই। দেশে এখন আন্দোলন করার মতো কোনো সাবজেক্টিভ কিংবা অবজেক্টিভ কন্ডিশনও নেই।
বিএনপির বিচারের ভার দেশবাসীর হাতে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিরোধী নেতারা যখন যেখানে খুশি অবাধে যাচ্ছেন, বক্তব্য দিচ্ছেন। সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় কথাবার্তা বলছেন। এর পরও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ কতটা গ্রহণযোগ্য, তা বিচারের ভার দেশবাসীর হাতে ছেড়ে দেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অমানিশা চলছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নয়, অমানিশা চলছে বিএনপির রাজনীতিতে। তারা এখন দিশেহারা পথিকের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছে। তারা যে ভাষায় কথা বলে, সেটি রাজনীতি বা গণতন্ত্রের ভাষা নয়।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লাগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করছে, তাদের ওপর নজর রাখছে সরকার। যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে কোনো দিন যাবে না’ বলে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই— বাংলাদেশ কি প্যালেস্টাইন হয়ে যাচ্ছে? এটি সম্পূর্ণ অবাস্তব বক্তব্য। রোহিঙ্গারা নিজ ভূমিতে পরবাসী। এখন তারা আমাদের এখানে আছে, তারা যাতে তাদের ভূমিতে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যাপারে সরকার কাজ করছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যারা নোংরা খেলায় মেতেছে, তাদের বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য আছে। সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারবালার হত্যাকাণ্ডের সময়ও কোনো নারী এবং শিশুকে হত্যা করা হয়নি। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। সে হত্যাকাণ্ড থেকে শিশু রাসেল এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীও বাদ যায়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড যারা ঘটায় তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না। নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী ষড়যন্ত্রকারী মীর জাফরসহ অন্যদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা দেখলেই বোঝা যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দিকে তাকালেও একই বিষয় পরিলক্ষিত হয়। জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা না করতেন, বিদেশে দূতাবাসে চাকরি না দিতেন, ইনডেমনিটি আইন করে হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ না করতেন, তা হলে হয়তো তাকেও এভাবে মরতে হতো না। যে বুলেট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে সেই বুলেটের আঘাতেই খালেদা জিয়াও বিধবা হয়েছেন।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন— আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার রত্না, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ২৭ ,২০১৯)