কক্সবাজার প্রতিনিধি: রোহিঙ্গাদের দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে কক্সবাজারের এনজিও ‘মুক্তি’র ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করতে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে এনজিও ব্যুরো।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে চিঠিটি জেলা প্রশাসকের হাতে পৌঁছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ‘মুক্তি’ রোহিঙ্গাদের জন্য ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি উঠে আসে। সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য তাদের ছয়টি প্রকল্প আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘‘সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের সরবরাহের জন্য তৈরি করা ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে প্রশাসন। ‘মুক্তি কক্সবাজার’ এনজিও ব্যুরোকে অবগত না করে গোপনে ওইসব অস্ত্র তৈরি করে তা রোহিঙ্গাদের মাঝে সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এতে কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল। তাই ‘মুক্তি কক্সবাজার’র ছয়টি প্রকল্পের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির ছয়টি প্রকল্প স্থগিত থাকবে।’’

উল্লেখ্য, সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার ভালুকিয়া সড়কে কামারের দোকানে তৈরির সময় ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। ‘মুক্তি’ নামের এনজিওটি এসব চাপাতি তৈরি করছিল বলে জানিয়েছেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা উখিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। একপর্যায়ে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্যাখ্যা দেয় ‘মুক্তি’।

সংবাদ সম্মেলনে ‘মুক্তি’র প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার জানান, মুক্তি কক্সবাজারের পক্ষ থেকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে ৬শ স্থানীয় উপকারভোগী পরিবারে সবজিচাষ প্রশিক্ষণ পরবর্তী বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরণ প্রদানের লক্ষ্যে সবজি বীজ, চারা, ভার্মি কমপোস্ট সার, পানির জার ও নিড়ানি সরবরাহের জন্য প্রকল্প নিয়েছে। এ বিষয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে ২৫ জুলাই মের্সাস কৃষি বিপণিকে (প্রোপাইটর মোহাম্মদ আজিজুল হক, (ঠিকানা- বিমানবন্দর সড়ক মহিলা কলেজের সামনে, কক্সবাজার) ২৬০০ পিস নিড়ানি, ২৬০০ পিস সেক্স ফেরোমনট্রাপ (গন্ধযুক্ত কীটনাশক) ও ২৬০০ পিস নজল (স্প্রেয়ার) সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৮/৩/২০১৯ তারিখে অনুমোদিত হয়। অনুমোদনের কপি যথারীতি এফডি-৭সহ জেলা প্রশাসক কক্সবাজার, আরআরআরসি, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের সিআইসিদের দেওয়া হয়। প্রকল্পটির পরিচিতি সভায় ৫/৫/২০১৯ তারিখে টেকনাফ ইউএনও’র কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মরত এনজিও এবং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদকে সবকিছু অবহিত করা হয়। সুতরাং মুক্তি কক্সবাজারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের যে অপপ্রচার হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মুক্তির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ। উপস্থিত ছিলেন সহ-সম্পাদক বাবলা পাল, দ্বীপক শর্মা দিপু।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ২৯ ,২০১৯)