পদ হারানোর পর রাব্বানীর ফেসবুকে স্ট্যাটাস ভাইরাল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়মের দায়ে পদ হারানো ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত। ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর ‘প্রত্যাশা পূরণ’ করতে না পারায় ও তার কারণে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে সোমবার দেয়া এক স্ট্যাটাসে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
ছাত্রলীগের পদ হারানোর পর সোমবারই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রথমবারের মতো নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন গোলাম রাব্বানী। সোমবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান তিনি। পোস্টে নিজের ভুলত্রুটির জন্য অনুতপ্ত বলেও দাবি ছাত্রলীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক। অবশ্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্পাদকের পদ হারালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে বহাল আছেন গোলা রাব্বানী।
গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘মমতাময়ী নেত্রী, আপনার মনে কষ্ট দিয়েছি, আমি অনুতপ্ত, ক্ষমাপ্রার্থী। প্রিয় অগ্রজ ও অনুজ, আপনাদের প্রত্যাশাপ্রাপ্তির পুরো মেইলবন্ধন ঘটাতে পারিনি বলে আপনাদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী। মানুষমাত্রই ভুল হয়। আমিও ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নই। তবে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে আবেগ-ভালোবাসার এই প্রাণের সংগঠনের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী 'গর্হিত কোনো অপরাধ' করিনি। আনিত অভিযোগের কতটা ষড়যন্ত্রমূলক আর অতিরঞ্জিত, সময় ঠিক বলে দেবে।
প্রাণপ্রিয় আপা, আপনি আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবের সুযোগ্য তনায়া, ১৮ কোটি মানুষের আশার বাতিঘর। আপনার দিগন্ত বিস্তৃত স্নেহের আঁচল, এক কোণে যেন ঠাঁই পাই। আপনার ক্ষমা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বাকিটা জীবন চলতে চাই।’
রাব্বানীর এই স্ট্যাটাসটি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। স্ট্যাটাসটিতে চার ঘণ্টায় ১৮ হাজারের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী লাইক দিয়েছেন। শেয়ার দিয়েছেন এক হাজার জনের বেশি। আর স্ট্যাটাসের নিচে মন্তব্য করেছেন ৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি।
উল্লেখ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে সম্প্রতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণ করা হয়। এরপর সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়।
শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোভন-রাব্বানীর প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘আমি ওদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বানালাম, কিন্তু ওরা পদ পাওয়ার পর ‘মনস্টার’ হয়ে গেল।’
শেখ হাসিনা বলেন, শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সর্বশেষ তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেটের পার্সেন্টেজ চাইতে গিয়েছিল। ভিসি সেটাতে রাজি হয়নি। উল্টো ভিসিকে তারা দোষারোপ করার চেষ্টা করেছে। এরা (শোভন-রাব্বানী) আসলে মনস্টার হয়ে গেছে। এদের আর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকার দরকার নেই। এরপরই তিনি শোভন-রাব্বানীকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন দুজনকে দায়িত্ব দেয়ার ঘোষণা দেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৯)