গণধর্ষণের মামলার বাদীর দুই পা গুঁড়িয়ে দিয়েছে আসামিরা
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে আলোচিত গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিরা মামলার বাদীর দুই পা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে ধর্ষণ মামলা উঠাতে একাধিকবার বাদীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে আসামিরা।
মঙ্গলবার রাতে সদ্য জেল থেকে বের হয়ে চাপলি বাজারে আসামিরা লোহার রড দিয়ে গণধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধুর স্বামী ছিদ্দিকের ওপর হামলা চালায়। হামলার পরে রক্তাত্ব অবস্থায় চাপলি বাজারে ফেলে রাখে। রাতে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিদ্দিককে বরিশাল শের-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
আহত ছিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত আনুমনিক সাড়ে ৮টার দিকে কলাপাড়া উপজেলা ধুলশ্বর বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি চায়ের দোকানে দাঁড়ায়। এসময় তার স্ত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত মামলার আসামি শাকিল, শাহ আলম, মামুন, রবিউলসহ কয়েক যুবক তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে। পরে স্থানীয় রুবেল নামে এক দোকানি মোটরসাইকেল ভাড়া করে ছিদ্দিককে বাড়ী পৌঁছে দিলে ছিদ্দিকের পরিবার তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু গেলে সেখানে সন্ত্রাসিদের বাধার মুখে তারা সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেননি।
ছিদ্দিকের চাচাতো ভাই কবির জানায়, কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে সন্ত্রাসিদের বাধার মুখে পরে চিকিৎসা নিতে পারেনি তারা। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমতলি এসে প্রাথমিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত দুই পা ব্যান্ডেজ করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন এবং বরিশাল নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হন।
হামলা শিকার ছিদ্দিক ও ভাই কবির আরো জানায়, চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল রাতে জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধুলাশ্বর ইউনিয়নের নতুনপাড়ায় স্বামী ছিদ্দিককে বেধে তার সামনে স্ত্রীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেন একই এলাকার মৃত মনু মাঝির ছেলে শাহ আলম, মনির হাওলাদারের ছেলে শাহিন, রবিউল, আল-আমিন, আব্দুর রশিদ, শাকিলসহ ১০ থেকে ১২ জন। এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল ধর্ষিতার স্বামী ছিদ্দিক বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযাগে দায়ের করেন। পটুয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিনের মাথায় ডাক্তার সেলিনা রহমান রোগীকে জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেন। এ মামলায় কয়েক আসামি জেলে গেলেও মামলার বাদী ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করে ধর্ষণ মামলার আসামিরা। ধর্ষণের মামলা উঠিয়ে নিতে একাধিকবার হুমকি দেয়া হয় বাদীকে। বেশ কয়েকবার বাদীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা। পরে তারা আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জেলে পাঠায়। জেল থেকে কিছু দিন আগে আসামিরা জামিনে বেড় হয়ে মঙ্গলবার রাতে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মহিপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ সোহেল আহমেদ জানায়, ‘ঘটনা শুনে আমি আহত ব্যক্তিকে বরিশাল যাওয়া জন্য সকল ব্যবস্থা প্রদান করেছি এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছি।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ১৮,২০১৯)