৪ টার মধ্যে ছাত্রদলের কাউন্সিলরদের ঢাকায় থাকার নির্দেশ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নিন্ম আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়ে গেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ কাউন্সিল। ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও আদালতের আদেশে রণেভঙ্গ হয় কাউন্সিল। ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা কাউন্সিলের পরবর্তী তারিখ নিয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন।
এই যখন অবস্থা তখন ৬ষ্ঠ কাউন্সিলের ৫৬৬ জন কাউন্সিলরকে বুধবার বিকাল চারটার মধ্যে ঢাকায় থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিকাল ৪টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আদালতের নির্দেশে স্থগিত ছাত্রদলের কাউন্সিল নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসেন কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। সেই বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপ এ যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠকের পর রাতেই ফোন করে সারাদেশের কাউন্সিলরদের ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে। সূত্র বলছে, আজই কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্তক্রমে কাউন্সিলের পরবর্তী তারিখসহ অন্যান্য করণীয় ঠিক করা হবে।
আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসার জরুরি তলব পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের একাধিক কাউন্সিলর। তারা জানিয়েছেন, ফোন করে বিকাল ৪টার মধ্যে অবশ্যই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এ বিষয়ে বলেন, ছাত্রদলের সব কাউন্সিলরদেরকে বুধবার বিকাল চারটার মধ্যে ঢাকায় থাকতে বলা হয়েছে।
কী কারণে তাদের জরুরি তলব এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতসহ বিভিন্ন বিষয় আছে। তাই তাদের ঢাকায় থাকতে বলা হয়েছে।
ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির তফসিল অনুযায়ী, ১০টি সাংগঠনিক বিভাগের ১১৬টি শাখায় মোট ৫৬৬ জন ভোটার (কাউন্সিলর) রয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৯টি শাখায় ৪৫ ভোট, ঢাকা বিভাগের ২৯টি শাখায় ১৩৮ ভোট, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি শাখায় ৫৮ ভোট, কুমিল্লা বিভাগের ৬টি শাখায় ৩০ ভোট, খুলনা বিভাগের ১৪টি শাখায় ৭০ ভোট, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি শাখায় ৪৫ ভোট, রাজশাহী বিভাগের ১১টি শাখায় ৫২ ভোট, সিলেট বিভাগের সাতটি শাখায় ৩৫ ভোট, রংপুর বিভাগের ১৩টি শাখায় ৬৩ ভোট ও ফরিদপুর বিভাগের ছয়টি শাখায় ৩০ ভোট রয়েছে।
এদিকে সাংগঠনিক অভিভাবক নির্বাচন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সারাদেশ থেকে আসা ছাত্রদলের কাউন্সিলররা সর্বসম্মতিক্রমে সাংগঠনিক অভিভাবক নির্বাচন করেন। বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এ দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নেয়া এ সিদ্ধান্ত পরে ঘোষণা করা হয়।
একই সঙ্গে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেয়া সব সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের ওপর আস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নেন কাউন্সিলররা। বৈঠকে কাউন্সিলরদের লিখিত প্রস্তাবে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সভাপতি ও কাউন্সিলর খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে এ কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনশর বেশি কাউন্সিলর অংশ নেন। কাউন্সিলে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পর্যালোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে ২৬ দফা প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ছাড়া ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিলের জন্য তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সভায় অংশ নেয়া কাউন্সিলররা। কাউন্সিলরদের লিখিত প্রস্তাব ও সিদ্ধান্তে তারেক রহমানকে ছাত্রদলের গঠন ও পুনর্গঠনসহ নেতৃত্ব নির্ধারণে নির্বাচন ও পরিচালনা করা তথা যে কোনো সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেয়া হয়।এর ফলে তারেক রহমান ছাত্রদল গঠন, পুনর্গঠনসহ গঠনতন্ত্র সংশোধন, কাউন্সিল আহ্বান, কাউন্সিল মুলতবি, নেতৃত্ব নির্ধারণে নির্বাচন পরিচালনা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ১৮,২০১৯)