অবশেষে আফগান বধ
স্পোর্টস প্রতিবেদক , দ্য রিপোর্ট: অবশেষে আফগান বধ করতে পেরেছে সাকিবের দল। চট্টগ্রামে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের ড্রেস রিহার্সেলে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়ে প্রস্তুতি সেরে রাখলো বাংলাদেশ। ১৩৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
টানা চার ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে হারের পর বাংলাদেশ কোনওভাবেই আফগানদের স্পিন জুজু কাটিয়ে উঠতে পারছিল না সাকিবরা। অবশেষে সেই জুজু কাটালো শনিবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
শুরুতে আফগানদের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। উইকেটে ঘাস আছে দেখে পেসারদের দিয়ে শুরুটা আক্রমণাত্মক করতে চেয়েছিলেন। তেমন পরিকল্পনায় বল হাতে বেশ সফল ছিলেন সাইফ-শফিউলরা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আফগানরা ৭ উইকেটে করতে পারে ১৩৮ রান।
তার জবাবে বাংলাদেশের ব্যাট হাতে শুরুটা ছিল হতাশাজনক। ওপেনিংয়ে কাঙ্ক্ষিত জুটি গড়েনি এবারও। দুই ওভার দেখে শুনে খেললেও তৃতীয় ওভারে মুজিবের ঘূর্ণিতে তালুবন্দী হয়েছেন লিটন দাস। তিনি বিদায় নেন ৪ রানে। পরের ওভারে নাজমুল শান্তও উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিদায় নিয়েছেন অভিষিক্ত নাভিন উল হকের বলে।
তবে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও সাকিবের লড়াকু এক জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে বাংলাদেশ। এই জুটিই জয়ের মঞ্চ গড়ে দেয় বাংলাদেশের। ৫৮ রান করে ফেলা এই জুটি ভেঙে দেন করিম জানাত। মুশফিককে বিদায় দেন ২৬ রানে। অবশ্য মাঝের দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়ায় চাপে ছিল স্বাগতিকরা। নতুন নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ৬ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় দেন রশিদ খান। অথচ হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরি নিয়েও খুঁড়িয়ে বল করেছেন তিনি।
সাব্বির রহমান আজ দলে এসেছিলেন আমিনুল বিপ্লবের বদলে। ভূমিকা রাখতে পারেননি কোনও। ১ রানে ফিরে গেছেন অভিষিক্ত নাভিনের বলে। অপর প্রান্ত এরপরেও থেকেছে অরক্ষিত।এমন অবস্থায় আফিফ হোসেন নামলেও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। রশিদের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ২ রানে। তবে সাকিব অপরপ্রান্ত আগলে দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেওয়ায় কক্ষপথেই থেকেছে বাংলাদেশ। সাকিব তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। ৪৫ বলে অপরাজিত ছিলেন ৭০ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছয়। মোসাদ্দেক মিনি ঝড় তুলে ১২ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থেকে জয়কে করেছেন আরও ত্বরান্বিত। ম্যাচসেরাও হয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আফগানদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন রশিদ খান ও নাভিন উল হক।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানদের স্কোরটা বড় হতে পারতো আরও। কিন্তু আফিফের জোড়া আঘাতের পর শুরুর দাপটটা টেকেনি তাদের। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ৫ ওভার সেভাবে রান পায়নি তারা। ২ রানে মাহমুদউল্লাহর ভুলে জীবন পাওয়া রহমানউল্লাহ ও জাজাই ঝড়ো গতিতে রান তুলেছেন শুরুতে। তবে ব্যয়বহুল ষষ্ঠ ওভারে এই ক্যাচ মিসেরই মাশুল দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ষষ্ঠ ওভারে ১৬ রান দিয়েছেন।
জাজাই অবশ্য আরও বেশি বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন। ৩৫ বলে ২ ছক্কা ও ৬টি চারে করেছিলেন ৪৭ রান। দশম ওভারে তাকে ফিরিয়েই বাংলাদেশ দলে স্বস্তি ফেরান আফিফ হোসেন। একই ওভারে নতুন নামা আসগর আফগানকেও বিদায় দেন আফিফ। তারপর আর আগ্রাসী রূপে থাকেনি আফগানদের ব্যাটিং। ২ রানে জীবন পাওয়া রহমানউল্লাহ স্কোরবোর্ড কিছুক্ষণ সমৃদ্ধ করলেও ২৯ রানে তাকে তালুবন্দী করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। দ্রুত তিন উইকেট পড়ে গেলে মোহাম্মদ নবীও থিতু হতে পারেননি। তাকে ৪ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
দ্রুত উইকেট পতনে দিশেহারা আফগানরা ধীরে ধীরে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে ১১৪ রান তুলতেই। তখন ছিল ১৭ ওভার। তবে শেষ দিকে রশিদ খান ও শফিকউল্লাহ দ্রুত গতিতে রান তুললে ৭ উইকেটে ১৩৮ রান তুলতে পারে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে ৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন আফিফ হোসেন। একটি করে নিয়েছেন সাইফউদ্দিন, শফিউল, সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান।
( দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/২১ সেপ্টেম্বর,২০১৯)