দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, প্রায় সাড়ে আট কেজি স্বর্ণ (৭৩০ ভরি) এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাফি বুলবুল বলেন, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযানের আগেই সেখান থেকে পাঁচটি সিন্দুক সরানো হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি পাওয়া গেছে বানিয়ানগর মুরগিটোলায় গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বাসায়। সেখানে পাওয়া গেছে নগদ ১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, ৭৩০ ভরি স্বর্ণের গয়না এবং দুইটি পিস্তল, দুইটি এয়ারগান ও একটি শটগান।

লালমোহন সাহা স্ট্রিটে এনামুল হক এনুর কর্মচারী আবুল কালামের বাসায় পাওয়া গেছে একটি সিন্দুক। সেটি ভাঙার পর পাওয়া গেছে দুই কোটি টাকা। ওই বাসা থেকে একটি পিস্তলও উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

আর শরৎগুপ্ত রোডে এনুর বন্ধু হারুন-অর-রশিদের বাসায় পাওয়া গেছে পঞ্চম সিন্দুকটি। সেখানে আরও অন্তত দুই কোটি টাকা পাওয়া গেছে।

সোমবার মধ্যরাত থেকে এনামুল ও রুপনের গেণ্ডারিয়ার বাসায় র‌্যাবের অভিযান শুরু হয়। সেখানে অভিযান শেষ করে মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব সদস্যরা লালমোহন সাহা স্ট্রিট ও শরৎগুপ্ত রোডে অভিযানে যান। বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত ওই অভিযান চলে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ টাকা, স্বর্ণালংকার জব্দ করা হলেও তাৎক্ষণিকভবে কাউকে আটক করা যায়নি।

গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন শেয়ার হোল্ডার। তার ভাই রুপন ভূঁইয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

র‌্যাব জানায়, রাজধানীতে এনামুলদের ১৫টি বাসা আছে। তবে স্থানীয়রা জানান, ওয়ারি, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, বংশাল, কোতয়ালী এলাকায় এনামুল ও রুপনের ৫০টি বাড়ি আছে। এনামুল এবং রুপন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের অন্যতম শেয়ার হোল্ডার। ক্লাব থেকে টাকা এনে তারা বাসায় রাখতেন। টাকার পরিমাণ বিপুল হওয়ায়- তা রাখার অনেক বেশি জায়গা লাগায় তিনি স্বর্ণালংকার কিনে রাখতেন।

এনামুল হক এক সপ্তাহ আগে থাইল্যান্ড চলে গেছেন এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়া পলাতক। র‌্যাব তাকে খুঁজছে। গেণ্ডারিয়ার বিভিন্ন এলাকার দেয়ালে দেয়ালে দুই ভাইয়ের ছবিসহ পোস্টারও দেখা গেছে।

র‌্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনামুল সপ্তাহ খানেক আগে থাইল্যান্ডে চলে গেছেন। তার ভাই রুপনেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

র‌্যাব জানায়, ১৯৮৫ সাল থেকেই এনামুল ও রুপন ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ও আরামবাগ ক্লাবে পরিচালিত অভিযানের সূত্র ধরে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এ ব্যবসার সঙ্গে।

গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত জাহান বলেন, এনামুল হক থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আর রুপন ভূঁইয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা এ দুজনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ২৪,২০১৯)