দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন অলিতে গলিতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনোর রমরমা ব্যবসা চলছে। শুধু ক্লাবই নয়, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাটবাড়িতেও অবৈধ ক্যাসিনোতে চলছে জুয়ার ব্যবসা। এসব ক্যাসিনো চালাচ্ছেন যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। ঢাকায় ফ্যাটবাড়িতে এমন ২১টি ক্যাসিনোর বিষয়ে তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

এসব ফ্ল্যাট ও ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার কারিগরি দিকগুলো দেখতেন শতাধিক নেপালি নাগরিক। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, এসব বিদেশি ভ্রমণ ভিসায় এসে দিনের পর দিন জুয়া পরিচালনার কাজ করেছেন।

১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিলে চারটি ক্লাবের ক্যাসিনোতে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানোর পর এসব নেপালি গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মতিঝিলের ফকিরাপুল ইয়াংমেনস ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রে র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। পর দিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেফতার করা হয় কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় ঠিকাদার জিকে শামীমকে, যিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।

ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার মূলে আছেন সম্রাট। তার হাত ধরেই ক্যাসিনোর প্রসার ও বিস্তার।

তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই অবৈধ এ বাণিজ্যের আদি-অন্ত বের করা যাবে। বন্ধও করা সম্ভব অবৈধ এ ব্যবসা।

সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সম্রাটের সহযোগিতায় ও প্রত্যক্ষ মদদে ঢাকার এক অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন খালেদ মাহমুদ ভূইয়া। নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করেন তিনি। রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন এ যুবলীগ নেতা। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াংমেনস নামের ক্লাবটি সরাসরি পরিচালনা করেন তিনি। প্রতি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো বসে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগের একটি প্রতিবেদন এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার কিছু লোকজনের দৌরাত্ম্যে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ২৫,২০১৯)