দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শাকিব খান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। তার পারিশ্রমিকের উঠানামা হয় নিয়মিত। কখনো কখনো একটি সিনেমার বাজেটের ৮০ শতাংশই তার পকেটে যায়। যাবেই না কেন! শাকিব খান বলতে যে লগ্নি ফেরত পাওয়া যায় বলে জানা যায়।

অবশ্য লগ্নি ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তাতে প্রযোজকের মাথা ব্যাথা নেই। টাকা লগ্নি করাটাই যে বড় কথা। আয় ব্যায়ের হিসেবে শাকিব খানের বাজেট কোনমতেই ৫০ লক্ষ টাকার বেশি বর্তমান সময়ে হতে পারে না। কিন্তু শোনা যায় তিনি তার অনেক বেশি পারিশ্রমিকও নিয়ে থাকেন। তবে সেটা সময় ও প্রযোজক দেখে। শাকিব খানের সঙ্গে এমন টাকা ওয়ালা প্রযোজকের অভাব নেই। যারা টাকার হিসেব করে না।

সিনেমায় লগ্নি করে কালো টাকা সাদা করে। সাম্প্রতিক সময়ে শাকিব খান এমন কয়েকজন প্রযোজকের সঙ্গে সিনেমা করেছেন যারা রয়েছে গোয়েন্দা নজড়দারিতে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার আব্দুল আজিজ তো দীর্ঘদিন নিঁখোজ। যদিও তার কম্পানি এবং ব্যবসা রয়েছে বহাল তবিয়তে। এছাড়াও যুবলীগের এনামুল হক আরমান ও সেলিম খানের মতো নেতারাও রয়েছে শাকিব খানের প্রযোজকের খাতায়। গোয়েন্দারা এসব প্রযোজকের সঙ্গে শাকিব খানের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। শুধু শাকিব খান নয়, চলচ্চিত্রের আরো বেশ কয়েকজন মানুষ রয়েছে গোয়েন্দা নজড়দারিতে। যাদের টাকার হিসেব দিতে হবে। অবৈধ টাকা সিনেমায় উড়ানো এখন অনেকটাই বন্ধ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমান এক সময় ছিলেন গুলিস্তানের হকার। ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে ঢাকায় এসে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের আশপাশে লাগেজ বিক্রি করতেন তিনি। পরবর্তীতে ক্যাসিনো কারবারের বদৌলতে তিনি বনে গেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক।

গত এক দশকে কয়েক শত কোটি টাকা কামিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে রেখে দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আরমান লগ্নি করেছেন কয়েক কোটি টাকা।

ক্যাসিনো থেকে বিপুল অর্থ আয়ের পরে একসময় চলচ্চিত্র তারকাদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন আরমান। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে বেনামে সিনেমায় অর্থ লগ্নি করতে শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে নিজেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খুলে জমিয়ে বসেন। ‘দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়া’ নামের চলচ্চিত্র প্রোডাকশন হাউসের প্রধান কর্ণধার আরমান।

গত ঈদুল আযহায় মুক্তি পাওয়া শাকিব খান ও বুবলী অভিনীত ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ সিনেমাটির প্রযোজক আরমান। এটি আরমানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রথম ফিল্ম। এরপর শাকিব খানের বিপরীতে নবাগত জাহারা মিতুকে নিয়ে ‘আগুন’ নামের দ্বিতীয় ফিল্মের কাজও শুরু হয় আরমানের প্রযোজনায়।

আরমানের প্রথম ফিল্মের মহরত অনুষ্ঠান হয় ঢাকা ক্লাবে। দ্বিতীয় ফিল্মের মহরত হয় হোটেল সোনারগাঁওয়ে, আরও আরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে।

শাকিব খানের আরেক প্রযোজক যিনি গোয়েন্দা সংস্থার নজড়দারিতে রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। একসময় রিকশা চালিয়ে, কখনও চুরি করে জীবন চলতো সেলিম খান। চাঁদপুর শহরে পরিচয় ছিল চোরা সেইল্লা হিসেবে। আর এখন তিনি শত কোটি টাকার মালিক। হয়েছেন সাহেব। সেলিম সাহেব। বেশি দিন আগের কথা নয়। আশির দশকে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। আর চুরির অপরাধে ইউনিয়ন পরিষদের সিলিংয়ে টাঙিয়ে বিচার করা হয়। ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটানো হয়।

অপরাধের কারণে তার পিতা মুচলেকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন। মুচলেকা দেন এই বলে- তার ছেলে মারা গেলে কোন অভিযোগ নেই। আর এখন সেলিম ওই ইউনিয়ন পরিষদেরই চেয়ারম্যান। চাঁদপুর ১০নং মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সেলিম খানের সঙ্গে এককালীন বেশকিছু সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয় শাকিব খান। যার প্রতিটা সিনেমার জন্য শাকিব খান মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক নেন। সিনেমার বর্তমান অবস্থায় তিনি এই মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক কিভাবে দাবি করেন সেটাও গোয়েন্দারা তলিয়ে দেখবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ২৫,২০১৯)